নিজস্ব সংবাদদাতা, আরামবাগ: প্রতিবছর আরামবাগের মহিলা ঢাকিরা ভিন রাজ্যে গিয়ে পুজোর সময় ভালোই রোজগার করে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি কিছুটা আলাদা। অন্যান্য রাজ্য থেকে ভেসে আসছে বাঙালি বিদ্বেষ। ফলে সাহস পাচ্ছেন না আরামবাগের মহিলা ঢাকিরা। কয়েক দিন পরেই পুজো। কিন্তু মনে আনন্দ নেই আরামবাগের মহিলা ঢাকিদের। অন্যান্য বার ভিন রাজ্য থেকে ডাক আসে তাঁদের। সেখানে বাজাতে গেলে আয়ও ভালোই হয়। কিন্তু বাধ সেধেছে সেই বাঙালি বিদ্বেষ। ডাক এলেও, তা বাধ্য হয়েই বাতিল করতে হচ্ছে। মনের মধ্যে অজানা আশঙ্কা পুষে রেখে বেশি রোজগারের টানেও কেউ আর অন্য রাজ্যে যেতে চাইছেন না তাঁরা। মন ভার করে তাই এখানেই থেকে যাওয়া। জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের পুনে, নাগপুর, ওডিশা, ঝাড়খণ্ড এমনকী উত্তরপ্রদেশ থেকেও আমন্ত্রণ আসে তাঁদের কাছে। এ বারে সেই ডাক ফেরাতে হচ্ছে তাঁদের।
তবে সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর থেকে যে কার্ড পেয়েছেন, সেই কার্ডে তাঁরা মহালয়ার দিন থেকে ১৪ দিন কাজ করবেন ঢাকের উপরে। তাতেই তাঁদের যা আয় হবে, তা দিয়েই চালিয়ে নিতে হবে। এ ছাড়া, ব্যান্ডেল, চুঁচুড়া, উত্তরপাড়া, কলকাতা–সহ এই রাজ্যেরই বিভিন্ন শহরতলিতে বাজাতে যান তাঁরা। উল্লেখ্য, আরামবাগ মহকুমায় এই মুহূর্তে মহিলা ঢাকিদের বেশ কয়েকটি দল আছে। সেই সব দলকে নিয়ন্ত্রণ করেন তাঁদেরই প্রশিক্ষক দিলীপ দাস। তিনিই তাঁদের ‘মাস্টারমশাই’। তাঁর তত্ত্বাবধানে ও প্রশিক্ষণে আজ অনেক মহিলা, গৃহবধূ এই কাজে এসে, সম্মানের সঙ্গে উপার্জন করছেন। সংসারের হাল ধরেছেন। নিজেদের খরচ, সংসার খরচ, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে নেন তাঁরা। তবে ঢাক বাজাতে যাওয়া, বিভিন্ন কাজে যুক্ত থাকাতে কোনও আপত্তি করেননি তাঁদের স্বামী বা বাবারা। আর এঁদের উদ্বুদ্ধ করেছেন এই মাস্টারমশাই–ই।