বন্দনা ভট্টাচার্য, হুগলি : পুরির পরেই বিখ্যাত হুগলীর শ্রীরামপুর মাহেশের রথযাত্রা। ভারতের দ্বিতীয় প্রাচীনতম ও বাংলার প্রাচীনতম রথযাত্রা। ১৩৯৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে মাহেশে মহাসমারোহে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারেও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হল এই উৎসব। এটি ৬২৭ তম বর্ষ। সকাল থেকেই চলছে পূজো, পাঠ,হরিনাম, সংকীর্তন। রয়েছে রকমারী ভোগের আয়োজন। সমাজের সর্ব স্তরের, সর্ব ধর্মের মানুষের ভীড় উপচে পরছে মন্দির প্রাঙ্গনে। বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছাস নিয়ে ভক্তরা এই পূণ্যভূমিতে আসেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে দর্শন করে,পূজো দিয়ে তাদের মনোস্কামনা পুরণ করার উদ্দেশ্যে, ও রথের দড়ি স্পর্শ করে পূণ্য অর্জনের আশায়।

পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী স্নান যাত্রার পরের দিন থেকে মহাপ্রভু জ্বরে আক্রান্ত হন। তাই পনের দিন মন্দিরের দ্বার রুদ্ধ থাকে। এই দিনগুলো ভক্তরা তাদের আরাদ্ধ দেবতার দর্শন থেকে বঞ্চিত থাকেন। পনের দিন পর তিনি সুস্থ হলে রথের আগের দিন মন্দিরের দ্বার অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয়। ঠিক তার পরের দিনই তিনি রথে করে সাত দিনের জন্য মাসির বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। মাহেশের রথ উৎসবকে কেন্দ্র করে রাস্তার দুধারে ও স্নান পিড়ির মাঠে মেলাও বসে। মেলা চলে উল্টো রথ পর্যন্ত। তাই এক কথায় বলা যায় রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে মাহেশ এখন উৎসব মুখর হয়ে উঠেছে।

এই প্রশঙ্গে জগন্নাথ মন্দিরের সম্পাদক পিয়াল অধিকারী জানান শুক্লা অমাবশ্যা দ্বিতীয়া তিথিতে রথযাত্রা উৎসব সুষ্ঠভাবে, নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হচ্ছে। ভোর বেলা মঙ্গল আরতি পর ভক্তদের থেকে পূজো নেওয়া শুরু হয়েছে। সকালবেলায় ভোগ নিবেদনের পর দেবতা ত্রয়কে গর্ভগৃহের বাইরে ভক্তদের দর্শনের জন্য বার করা হয়। সারাদিন ব্যাপি চলবে পূজার্চনা। বিকাল তিন দেবতাকে রথে তোলা হবে। ঠিক বিকাল চারটের সময় রথ চলা শুরু হবে মাসির বাড়ির উদ্যেশ্যে। সন্ধে ছটা থেকে সারে ছটার মধ্যে মাসির বাড়িতে পৌছে রত্নবেদীতে মহাপ্রভুকে প্রতিষ্ঠা করা হবে। উৎকল মতে ২৮শে জুন মাসির বাড়ি থেকে পূণর্যাত্রা করে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে মাহশে শ্রীমন্দিরে ফিরিয়ে আনা হবে।