নিউজ ডেস্ক, কুলপি : কুলপির গাজীপুর পঞ্চায়েতের দৌলতপুরে কংগ্রেসের বুথ সভাপতি আলফাজ উদ্দিন হালদার খুনের ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করল ঢোলাহাট থানার পুলিশ। এরা সকলেই তৃণমূল কর্মী- সমর্থক। এদের মধ্যে দৌলতপুর গ্রামের ৮৯ নম্বর বুথের তৃণমূল প্রার্থী নুরুদ্দিন হালদারের দুই ছেলে খাসমুর হালদার ও মানোয়ার হোসেন হালদার। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। ধৃতদের শুক্রবার কাকদ্বীপ মহাকুমা আদালতে পেশ করা হয়। তাদের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।
গাজীপুর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আব্দুর রহিম মোল্লা আলফাজের মৃত্যুর সংবাদে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ঘটনাটি সম্পূর্ণ পারিবারিক। কেউ কেউ এটাকে রাজনৈতিক রং লাগাচ্ছে। তবে এই ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত ব্যক্তিদের তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

মৃত্যুর খবর জেনে বৃহস্পতিবার রাতে নিহত কংগ্রেস কর্মী আলফাজ উদ্দিন হালদারের বাড়িতে আসেন কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল। নেতৃত্বে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়। এবং কংগ্রেসের জেলা সভাপতি মনোরঞ্জন হালদার সহ রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বরা। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা কথা বলেন নিহতের বাবা সাহাচাঁদ হালদারের সঙ্গে। যুক্তদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি তুলে কান্নায় ভেঙে পড়েন বৃদ্ধ সাহাচাঁদ। পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। কথা বলার মধ্যেই রাত আটটা নাগাদ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ফোন আসে নিহত আলফাজ উদ্দিনের বাবার ফোনে। রাজ্যপাল কথা বলেন নিহতের বাবার সঙ্গে। সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি। প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘দল নিহতের পরিবারের পাশে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা আদালতে দ্বারস্থ হবো। ভোট উৎসবের মধ্যে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতে যেভাবে একের পর এক মায়ের কোল শূন্য হচ্ছে, এটা বাংলার কাছে লজ্জার। এর দায় নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে। পুলিশ আর তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা এক হয়ে ভোট লুট করতে চাইছে। এটা সাধারণ মানুষ মেনে নেবে না।
শুক্রবার সকাল ৯টা নাগাদ রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস আবারও কথা বললেন মৃত কংগ্রেস কর্মী আলফাজ উদ্দিনের বাবা সাহাচাঁদ হালদারের সঙ্গে। পরিবারের পক্ষ থেকে রাজ্যপালের কাছে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া এদিন দুপুরে দৌলতপুরে নিহত কংগ্রেস কর্মী আলফাজ উদ্দিন হালদারের বাড়িতে আসেন বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল। কথা বলেন নিহত কংগ্রেস কর্মীর স্ত্রী ও বাবার সঙ্গে। এই ঘটনায় বিজেপির তরফেও পুলিশি নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলা হয়েছে। পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছেন বিজেপি নেতারা। এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার মাইনরিটি সেলের সভাপতি সাত্তার গাজী, রাজ্য নেতা কৃত্তিবাস সরদার প্রমুখ। ঘটনার মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্বরা।

‘অন্যদিকে এদিন নিযহত কংগ্রেস কর্মীর বাবা সাহাচাঁদ হালদার জানান, ‘কংগ্রেস ও বিজেপির প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বাড়িতে এসে আমার সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। এমনকি রাজ্যপাল মহাশয় আমাকে ফোন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। যেখানে সবাই আমাদের পাশে আছে, তখন আমরা এর শেষ দেখে ছাড়বো। ছেলের দেহ পড়ে থাকে থাকুক। আমরা ভোট করে তৃণমূলকে হারাবই।’