বন্দনা ভট্টাচার্য্য, হুগলী: মাঘী পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে কোন্নগর শঙ্করাচার্য মন্দিরে তিন দিন ব্যাপি চলছে রাজরাজেশ্বরী মার পূজো পাঠ। হুগলী নদীর পশ্চিম পাড়ে কোন্নগরে অবস্থিত রাজরাজেশ্বরী মন্দির। যা শংঙ্করাচার্য মঠ নামেও পরিচিত। এই মঠ অত্যন্ত জনপ্রিয় ও ধর্মস্থান হিসাবে ভক্তদের কাছে জনপ্রিয়। জ্যোর্তিপিঠ ও সারদাপিঠের অধিশ্বর স্বামী স্বরুপানন্দ সরস্বতী মহারাজ ১৯৯৬ সালে মাঘী পূর্ণিমার দিন এই মঠ প্রতিষ্ঠা করেন। তাই এই দিনে সকাল থেকেই চলে পূজো পাঠ। শুক্রবার মন্দির থেকে মা রাজরাজেশ্বরীর প্রতিক জগদম্বা দেবীকে নিয়ে শোভাযাত্রা সহকারে একটি রথ বের হয় নগর ভ্রমনে। কোলকাতার হেষ্টিংশে এক ভক্তের বাড়িতে রাতে মাকে রাখা হয়। সেখানে বিশেষ পূজোর পর, পরদিন সন্ধ্যের আগেই মা ফিরে আসেন এই মন্দিরে। প্রতিবছরের মত এই বছর ও শুক্রবার শোভাযাত্রা বের করেন ভক্তগন। শনিবার সন্ধ্যায় ফেরেন। রবিবার সকাল থেকে পূজো পাঠ শুরু হয়। জ্বালানো হয় হাজার প্রদীপ। পূজো শেষে দেবীর আরতীর পর শুরু হয় ভান্ডারা। পূজোর পর পাঁচ থেকে ছয় হাজার ভক্ত সকলেই বসে প্রসাদ গ্রহণ করেন। স্থানীয় ছাড়াও দুরদুরান্ত থেকে ভক্তরা এদিন এই ধর্মস্থানে এসে উপস্থিত হন।
মাঘী পূর্ণিমার মাহাত্ম নিয়ে পরম পূজনীয় শ্রীমৎ স্বামী সুবুদ্ধানন্দজী বলেন, মাঘী পূর্ণিমার দিন মহাগুরু জ্যোর্তিপিঠ ও সারদা পিঠের অধিশ্বর স্বামী স্বরুপানন্দ সরস্বতী মহারাজ এই দিনে মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেন সাতাশ বছর আগে। সেই থেকেই এই বিশেষ দিনে মন্দিরে উৎসব হয়। একে পাঠোৎসব বলে। এই বছর এই উৎসব আঠাশ বছরে পরলো। এই প্রশঙ্গে মঠের শ্রীমৎ স্বামী সচ্চিৎ স্বরুপ মহারাজ বলেন, প্রতি বছরের মত এই আঠাশতম বর্ষেও পাঠোৎসব পালন করা হচ্ছে। জগতের কল্যানের জন্য মা জগদম্বাকে নিয়ে বিশাল শোভাযাত্রা বের হয়েছিল। মন্দিরে ফিরে আসার পর এদিন মাকে শাগম্বরী রুপে সাজানো হয়। অর্থাৎ বিভিন্ন রকমের শাক সবজী দিয়ে মাকে সাজানো হয়। সকালে মায়ের অভিষেকের হয়। তারপর হাজার প্রদীপে আরতী ও ও ধ্বজা ওড়ানো হয়। অবশেষে মন্দিরে ছাপান্ন ব্যঞ্জন সহযোগে ভান্ডারা হয়। অগণীত ভক্ত এদিন মন্দির প্রাঙ্গনে বসে প্রসাদ গ্রহন করেন। মা জগদম্বা রাজরাজেশ্বরী। তাঁর কৃপায় কোন ভক্তই এদিন এই ধর্মস্থান থেকে অভুক্ত ফেরেনা।