বন্দনা ভট্টাচার্য্য, হুগলী: পঞ্চম শ্রেণীর নাবালিকা এক ছাত্রীকে বাড়িতে পড়াতে এসে দিনের পর দিন শারীরিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠলো প্রাক্তন এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম সুব্রত দাস। বয়স পঁয়ষট্টি বছর। নাবালিকা ছাত্রীটির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গ্রেফতার করেছে ওই শিক্ষককে। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলীর কোন্নগরের কানাইপুর পঞ্চায়েত এলাকায়। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সূত্র থেকে জানা গেছে, কানাইপুর ন’পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন সুব্রত দাস। পাঁচ বছর আগে তিনি অবসর নেন। নির্যাতিতা নাবালিকা এলাকারই একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। নাবালিকার বাবা দিনমজুরের কাজ করে। মা পরিচারিকার কাজ করে। অভিযুক্ত শিক্ষক আর্থিক ভাবে অসচ্ছল পরিবারের নাবালিকা ছাত্রীটিকে বিনা পারিশ্রমিকে বাড়িতে পড়াতে যেতেন। এবং পড়ানোর সুযোগে দামী উপহারের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটিকে প্রায় দিনই শারীরিক নিগ্রহ করতেন। মেয়েটি ভয়ে বাড়িতে কাউকে কিছু বলেনি।
গত দুমাস ধরে নাবালিকার শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে মেয়েটি বিষয়টি বাড়ির লোককে বলে। এরপরই বাড়ির লোক গোটা বিষয় এলাকার সব মহিলাদের জানায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত শিক্ষক সুব্রত দাস মেয়েটিকে পড়াতে আসলে, বাড়ির লোক বিষয়টি নজর রাখে। পড়াবার নামে শিক্ষক ওই পড়ুয়ার সাথে অশালীন আচরণ শুরু করলে বাড়ির লোক সহ এলাকার মহিলারা তাকে হাতেনাতে পাকড়াও করে। এরপর বাড়ির বাইরে বার করে এনে লাইট পোষ্টে বেঁধে মারধোর শুরু করে। খবর দেওয়া হয় কানাইপুর ফাঁড়িতে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত শিক্ষককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। নির্যাতিতা নাবালিকার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ধৃত শিক্ষকের নামে পকশো আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শিক্ষকের কঠোর শাস্তির দাবিতে এদিন কানাইপুর ফাঁড়িতে এলাকার মানুষ বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। পরে পুলিশের আস্বস্ত করলে তারা বিক্ষোভ তুলে নেয়। এই বিষয়ে গ্রামের এক ব্যাক্তি বলেন, প্রায় সময় ওই পড়ুয়াকে শিক্ষক সোনার জিনিস, মোবাইল, টাকা এই সব দিত। পরিবর্তে ছাত্রীটিকে নির্যাতন করত। একজন শিক্ষকের যদি এমন মানষিকতা হয় তাহলে ছাত্রীদের সুরক্ষা কোথায়? শিক্ষক শিক্ষিকারা সমাজ গড়ার কারিগর। তারাই যদি অপরাধ মূলক কাজ করেন, তাহলে আগামী দিনে স্কুল পড়ুয়ারা কি শিখবে? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চায় গোটা সমাজ।