Thursday, June 19, 2025
Ad

খেলতে গিয়ে পুকুরে ডুবে মৃত‍্যু এক নাবালকের, নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে।

Must read

বন্দনা ভট্টাচার্য্য, হুগলী: সকালে ফুটবল খেলতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত‍্যু হল এক নাবালকের। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলীর কোন্নগরে অ‍্যালকালি মাঠ সংলগ্ন পুকুরে। মৃত নাবালকের নাম অনিকেত সরকার। বয়স ১৪ বছর। বাড়ি কোন্নগর মাষ্টারপাড়ার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ধ্রুবতারা ক্লাবের সামনে। অনিকেত কোন্নগর নবগ্রাম বিদ‍্যাপীঠের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র। কোন্নগর স্টেশনের পাশে একটা পানের দোকান চালায় অনেকেতের বাবা অলোক সরকার। আর মা অনিমা সরকার রান্নার কাজ করে। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান অনিকেত। পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মত সোমবার সকালে অ‍্যালকালি কোয়ার্টারের মাঠে বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলতে যাবে বলে ভোরবেলা ৪.৩০ নাগাদ বাড়ি থেকে বের হয়। ৮ টা নাগাদ এক বন্ধুর মা এসে অনিকেতের বাড়িতে খবর দেয় অনিকেত জলে ডুবে গেছে। তৎক্ষনাৎ বাবা, মা সহ প্রতিবেশীরা এবং স্থানীয় ধ্রুবতারা ক্লাবের সদস‍্যরা ঘটনাস্থলে পৌছায়। উপস্থিত হয় ১৭নং ওয়ার্ডের পৌরপ্রতিনিধি অভিরুপ চক্রবর্তী ( সোনাই)। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় অ‍্যালকালি কোয়ার্টার এলাকার স্থানীয় ছেলেরা পুকুরে নেমে অনিকেতকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে। খবর পেয়ে কোন্নগর টাউন আউট পোষ্টের পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায়। অনিকেতের বন্ধুরা জানিয়েছে খেলার সময় বল জলে পরে যায়। সেই বল তুলতে গিয়ে অনিকেত ও শুভজিৎ নামে দুজন পুকুরে নামে। শুভজিৎ সাঁতার জানলেও অনিকেত সাঁতার জানতো না। এরপর দুজনেই পা পিছলে জলে পরে যায়। পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা বন্ধুরা শুভজিৎকে উদ্ধার করতে সক্ষম হলেও অনিকেত গভীর জলে তলিয়ে যায় এবং চোখের নিমেষে ডুবে যায়। বন্ধুদের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে আসে। এবং তারা অনিকেতকে উদ্ধার করতে জলে নামে। তাদের থেকে জানা যায় পুকুরটা ৪০ফুট গভীর সকাল ১১টা পর্যন্ত স্থানীয় ছেলেরা চেষ্টা করলেও অনিকেতকে উদ্ধার করা যায়নি। এরপরই স্থানীয় এবং অনিকেতের পাড়ার সকলের ক্ষোভের মুখে পরে পুলিশ।

প্রথম থেকেই অনিকেতের উদ্ধারে পুলিশ কোনো রকম সহযোগিতা করেনি বলেই সকলের অভিযোগ। পুকুর পাড়ে জড়ো হওয়া মানুষ জনের সময় সাথে ধ্রুবতারা ক্লাবের এক সদস‍্য বলাই লোধ পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, পুলিশ এসে গাছের তলায় দাঁড়িয়ে আছে। একাধিক বার পুলিশকে ডুবুরি আনতে বলা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হলেও কোনো ডুবুরি আনা হয়নি। যত সময় এগিয়েছে অনিকেতের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়েছে। পুলিশ গাছ তলায় দাঁড়িয়ে মোবাইল দেখছিল। এই ঘটনা যদি কোনো নেতা বা মন্ত্রীর বাড়িতে হত তাহলে পুলিশ এতটা নিস্ক্রিয় থাকতে পারতো না। তৎপরতার সাথে কাজ করতো। গরীব, সাধারণ মানুষের দিকে পুলিশ প্রশাসনের কোনো নজর নেই বলেও জানিয়েছেন বলাই লোধ। ঘটনাস্থলে কোন্নগর টিওপির অফিসার দিনেশ কুমার সিং ঘটনাস্থলে এলে অনিকেতের পরিজন ও স্থানীয়রা তাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। তিনি অবশ‍্য সকলকে আস্বস্ত করেন। এরপর বড় জাল ফেলা হয়। অবশেষে বেলা ১১.৩০ মিনিটে জালে করে উদ্ধার করা হয় অনিকেতকে। তাকে উদ্ধার করে দেওয়ালডির বেসরকারি হাসপাতাল মা সারদায় নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব‍্যরত চিকিৎসক অনিকেতকে মৃত ঘোষনা করেন। এরপর পুলিশ অনিকেতের দেহ ময়নাতদন্তের জন‍্য শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে পাঠায়। অভিরুপের তৎপরতায় এদিনই ময়না তদন্তের পর অনিকেতের দেহ তার পারিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অনিকেতের দেহ বাড়িতে আনার পর বাবা, মা ও আত্মীয় প্রতিবেশিরা কান্নায় ভেঙ্গে পরে। গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে। প্রশাসনের তরফে সব রকমর সহযোগিতা করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

- Advertisement -

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

Latest article