Son’s killer mother?
বন্দনা ভট্টাচার্য্য, হুগলী: “পুলিশ আমাদের ফাঁসিয়েছে, আমরা নির্দোষ, আমাদের ছেড়ে দিন, অনুরোধ করছি” আদালতে দাঁড়িয়ে এমনই আর্জি জানালো মৃত শ্রেয়াংশুর মা শান্তা শর্মা ওরফে গুড্ডি। ষোলোই ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজের ঘরেই খুন হয় আট বছরের ছোট্ট শ্রেয়াংশু। ওর হাতের শিরা কেটে, মাথা থেতলে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল। একরত্তি শ্রেয়াংশুর সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। উত্তরপাড়া থানার পুলিশ তদন্তে নামে। এলাকার সিসি টিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে এক রহস্যময়ীর খোঁজ পাওয়া যায়। ঘরে ছিল পোষ্য কুকুর। আততায়ীকে দেখে কুকুরটি কেনো চিৎকার করেনি, তাহলে কি আততায়ী পরিচিত ছিল? এই বিষয়ে পুলিশের প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল। ফরেনসিক তথ্য প্রমাণের উপর নির্ভর করে, সিসি টিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে, ফিঙ্গার প্রিন্ট বিশেষজ্ঞের সাহায্যে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে এই খুনে শান্তার যোগ রয়েছে। এরপরই কুড়ি তারিখ মঙ্গলবার সকালে শ্রেয়াংশুর মা শান্তা শর্মাকে কোন্নগরের বাড়ি থেকে এবং তার বান্ধবী ইফ্ফত পারভীনকে খিদিরপুর থেকে থানায় নিয়ে আসা হয়। সারা দিন জেরা করে দুজনের কথার অসঙ্গতি ও অন্যান্য তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে পুলিশ এদের গ্রেফতার করে। এদিন সন্ধ্যায় ডিসিপি শ্রীরামপুর অর্ণব বিশ্বাস জানান, শান্তা ও ইফ্ফত দুজনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বিয়ের আগে থেকে। বিয়ের পরও সেই সম্পর্কে ভাঁটা পরেনি। ছোট্ট শ্রেয়াংশু দুজনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে সম্ভবত বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আর তাই হয়ত দুজনে প্ল্যান করে ঠান্ডা মাথায় খুন করে শ্রেয়াংশুকে। সেদিন যে মা একমাত্র ছেলের খুনের অভিযোগ করেছিল, সেই মাকেই খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করলো পুলিশ। বুধবার ধৃতদের শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক সুদীপ ভট্টাচার্য্য দুজকেই নয় দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠান।
এদিন সরকার পক্ষের আইনজীবী ছিলেন সুদীপ সরকার। এদিন আদালতের কোন আইনজীবী আসামীদের হয়ে দাঁড়াতে চাননি। বুধবার সকাল থেকেই আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন মৃত শ্রেয়াংশুর বাবা পঙ্কজ শর্মা। দিন শেষে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, পুলিশের তদন্তে রয়েছে। কিন্তু তার একমাত্র ছেলের খুনিদের ফাঁসির দাবি জানান। কারণ সাজা হলে, চোদ্দ বা পনেরো বছর পর ওরা আবার এই সমাজে ফিরবে। কোনো ভাবেই ছেলের খুনিরা যেন সমাজে ফিরতে না পারে, এদিন আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে এই আর্জিই জানালেন মৃত সন্তানের শোকাতুর বাবা পঙ্কজ শর্মাl