বন্দনা ভট্টাচার্য্য, হুগলী :বুধবার সারা ভারত বর্ষে সাড়ম্বরে পালিত হলো জন্মাষ্ঠমী ব্রত। শ্রীকৃষ্ণ মন্ত্রী ভক্তরা এই দিনটি অত্যন্ত উৎসাহের সাথে পালন করেন। হিন্দু পঞ্জিকা মতে, সৌর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য হয়, তখন জন্মাষ্টমী পালিত হয়। হিন্দু শাস্ত্র মতে প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে দুষ্টের দমন ও সৃষ্টির পালন করার জন্য মথুরা নগরীতে দুরাচারী রাজা কংশের কারাগারে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়। ভাদ্রমাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথীতে বাবা বসুদেব ও মা দেবকীর অষ্টম গর্ভজাত সন্তান শ্রীকৃষ্ণ জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। তাই এই দিনটিতে কৃষ্ণমন্ত্রে দিক্ষীতরা তাদের আরাধ্য দেবতার জন্মদিন পালন করেন।

শ্রীরামপুরের মুখার্জী পরিবারেও এই দিনে শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন পালিত হল মহাসমারোহে। এই বাড়ির গৃহ দেবতা পাঁচ শত বছরেরও বেশী সময়ের পুরোনো। বুধবার সকাল থেকেই মহা সমারোহে এই জন্মাষ্ঠমী তিথী পালন করাহয়। এই প্রশঙ্গে মুখার্জী পরিবারের প্রবীনা সদস্যা চিন্ময়ী মুখার্জী জানালেন, দিনেমারদের রাজত্ব কালে শ্রীরামপুরে এত ঘন জন বসতি ছিলনা। সেই সময় একদিন জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করতে গিয়ে দিনেমাররা দেখতে পায় ঘন জঙ্গলের মধ্যে একটি মন্দির। এবং তার ভিতরে মদন মোহনের মূর্তি রয়েছে।
কথিত আছে কিছু গৌড়িয় সম্প্রদায়ের মানুষ একসাথে বসবাস করত। যাকে আখড়া বলা হত। সেই আখড়াতে তারা পুজা অর্চনা, সাধন ভজন করতেন। একটা সময়ে সেই সম্প্রদায়ের মানুষরা সেখান থেকে অন্যত্র চলে যায়। মদন মোহনের বিগ্রহ সেখানেই রেখে যায়। জঙ্গল পরিষ্কার করতে গিয়ে নারায়নের সেই মূর্তি আবিষ্কার হয়। তখনকার সময়ে প্রথম বাঙ্গালী ম্যাজিস্ট্রেট স্বর্গীয় গোপাল চন্দ্র মুখার্জী সেই সময় মদন মোহনকে তাঁর এই বাড়িতে নিয়ে আসেন। সেই থেকেই গৃহ দেবতা হিসেবে বাসুদেব পূজিত হয়ে আসছেন।

জন্মাষ্ঠমীর দিন সকাল থেকেই চলেছে পূজো পাঠ। প্রায় হাজার ভক্ত এদিন পূজো শেষে প্রসাদ গ্রহণ করেন। সাধারণ মানুষের সাথে অনেক গণ্যমান্য ব্যাক্তিও এদিন মদনমোহনের পূজোতে উপস্থিত হয়েছিলেন। এই মন্দিরের কোনো ট্রাস্টি নেই। পরিবারের সদস্যরাই পালা করে গৃহ দেবতা বাসুদেবের পূজোর দায়িত্ব পালন করেন।