বন্দনা ভট্টাচার্য, হুগলি: ফুরফুরা মাজার শরীফ, পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার একটি ধর্মীয় দরবার শরীফ ও আধ্যাত্বিক শিক্ষাদানের প্রতিষ্ঠান। জনশ্রুতি রয়েছে, রাজস্থানের আজমীর শরীফের পরেই দেশের দ্বিতীয় সবচেয়ে সম্মানিত উল্লেখযোগ্য মাজার। এই মাজারটি হুগলি জেলার শ্রীরামপুর মহকুমার জাঙ্গিপাড়া সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের ফুরফুরা গ্রামে অবস্থিত। এই মাজার শরীফটি উপমহাদেশের মুসলিমদের নিকট অত্যন্ত পবিত্র ও সম্মানিত একটি স্থান। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হলো সেই ফুরফুরা শরীফের ঐতিহাসিক বাৎসরিক ঈসালে সওয়াব। চলবে শনিবার পর্যন্ত। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই ঈসালে সওয়াব পীর যুগ সংস্কারক মোজাদ্দেদ জামান দাদা হুজুরের প্রতিষ্ঠিত উৎসব। ১৮৯০ সালে তিনি ফাল্গুন মাসের ২১-২২ ও ২৩ তারিখ নির্ধারণ করেন এই উৎসবের, যা আজও প্রতিবছর ওই তিন দিন ধরে পালিত হয়। এই উৎসবে লক্ষ লক্ষ লোকের আগমন ঘটে। এই বছর এটি ১৩২ তম উৎসব বলে জানাগেছে। এই ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে তিন দিন ধরে। এই উৎসবে ধর্মীয় এবং সামাজিক বিষয় শিক্ষা দেওয়াই এই উৎসবের মূল উদ্দেশ্য।

ঐতিহাসিক ইসালে সওয়াব ঘিরে বিভিন্ন রাজ্য সহ ওপার বাংলা থেকেও অনেক ভক্ত ভিড় জমান ফুরফুরা শরীফে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদেরও দেখা যায় এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। সূত্রের খবর, ফুরফুরা শরীফের মুখ্য নির্দেশক পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী, পীর ওমর সিদ্দিকী, পীর ইসমাইল সিদ্দিকী, পীরজাদা মেহরাব সিদ্দিকী, পীরজাদা সোবহান সিদ্দিকী, পীরজাদা কাশেম সিদ্দিকী, পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী, পীরজাদা সানাউল্লাহ সিদ্দিকী এবং বিধায়কাদের বিশেষ ভূমিকা থাকে এই উৎসব ঘিরে। এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে শেষ প্রার্থনা (দোয়া) করবেন পীরজাদা আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী এবং ইসমাইল সিদ্দিকী বলে জানা গিয়েছে। এ বছর ফুরফুরা শরীফের ঐতিহাসিক এই উৎসবের জন্য বিভিন্ন রুটে বাস চালানো হবে বলে পরিবহন দপ্তর থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই উৎসবকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য বুধবার একটি প্রশাসনিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী, হুগলির জেলাশাসক মুক্তা আর্য, ফুরফুরা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আধিকারিক তথা সপ্তগ্রামের বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত, হুগলি গ্রামীণ পুলিশ সুপার কামনাশিষ সেন, হুগলি জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখার্জী সহ একাধিক বিশিষ্টজন।