ইন্ডিপেনডেন্ট জার্নালিস্টস্ অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক রাজ্য সম্মেলন। (AGM)
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সম্প্রতি কলকাতা প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয় ইন্ডিপেনডেন্ট জার্নালিস্টস্ অ্যাসোসিয়েশনের (IJA) বার্ষিক রাজ্য সম্মেলন। প্রদীপ জ্বালিয়ে এই বার্ষিক সভার উদ্বোধন করেন রোটারি ক্লাবের ডিস্ট্রিক্ট গভর্ণর ডাক্তার অমিতাভ চক্রবর্তী, বিশিষ্ট আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়, অনুষ্ঠানের সভাপতি সাংবাদিক শ্যামলেন্দু মিত্র, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাজাহান সিরাজ, সহ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম প্রমুখ। সম্মেলনের বিষয় ছিলো “ভারতের সংবিধান কি বিপন্ন?”। এই বিষয় আলোচনা করেন বিশিষ্ট আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, আসলে সাংবিধানিক নৈতিকতার সর্ম্পকে আমরা উদাসীন। আমাদের দেশের সংবিধান শক্তিশালী। তার উপর আস্থা রাখতে হবে। পাশাপাশি নিরপেক্ষ সাংবাদিকতা অত্যন্ত জরুরি।
কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক স্নেহাশিস শূর বলেন, এখন ডিজিটাল সাংবাদিকতায় অনেক নিয়ম এসেছে কেন্দ্রীয় স্তরে। এমনকি ফৌজদারি আইন তৈরি হয়েছে। বিনা প্রমাণে যাকে তাকে নিয়ে যা খুশি সংবাদ করা যাবে না। এদিনের এই আলোচনায় অংশ নেন প্রাক্তন সাংসদ, সাংবাদিক ও পুবের কলম দৈনিকের সম্পাদক আহমেদ হাসান ইমরান, সাংবাদিক প্রসূন আচার্য্য , কল্যাণ মৈত্র, রজনী মুখার্জী, সীতারাম আগরওয়াল সহ অনেক সাংবাদিক।
এদিন অলোচনায় ভারতের গণতন্ত্র ও সংবিধান সম্পর্কে আহমেদ হাসান ইমরান বলেন, ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। এই দেশের গণতন্ত্র এখন বিপন্ন। দেশের সংবিধান বাস্তবে আক্রান্ত হচ্ছে, বর্তমান কাঁওড় যাত্রাই তার প্রমাণ। অবশ্য দেশের সংবিধানকে বিপন্ন করার প্রচেষ্টা সাধারণ মানুষ বানচাল করেছে। সাধারণ মানুষ গণতন্ত্র রক্ষা করার কাজে এগিয়ে এসেছেন। উপস্থিত সাংবাদিক প্রসুন আচার্য এ দেশে বৈচিত্র্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, ভারতে মুসলিম প্রতিষ্ঠান বা দোকানে হিন্দুরা কাজ করেন। আবার হিন্দু প্রতিষ্ঠানে মুসলিমরা কাজ করেন। এই বৈচিত্র্যকে ভাঙতে সুকৌশলভাবে কাঁওড় যাত্রা করা হচ্ছে। এতে সংবিধানকে অমান্য করা হচ্ছে। কে কী খাবেন, কে কোথায় খাবেন তা নিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। ভারতের সংবিধান এখন বিপন্ন। তাই সংবিধান বাঁচাতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
ইন্ডিপেনডেন্ট জার্নালিস্টস্ অ্যাসোসিয়েশনের (Independent Journalists Association) সাধারণ সম্পাদক সাজাহান সিরাজ জানান, সরকারের কাছে আমাদের কিছু দাবি আছে। সেই গুলো হলো : রাজ্যের প্রতি মহকুমায় আরএনআই স্বীকৃত এবং জেলা তথ্য ও সংস্কৃত দপ্তর অনুমোদিত পাক্ষিক ও সাপ্তাহিকপত্র-পত্রিকাগুলোকে একটি করে এ্যাক্রিডিটেশন কার্ডের অনুমোদন দেওয়া হোক।
সাংবাদিকদের চিকিৎসা ব্যবস্থায় আলাদা স্বাস্থ্যকার্ড দেওয়া হোক।
জেলার অনুমোদিত পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত বিজ্ঞাপন দেওয়ার পাশাপাশি পুরানো আমলের বিজ্ঞাপনের ‘রেট’ পরিবর্তন করা হোক।
পঞ্চায়েত এবং পৌরসভার উন্নয়নমূলক কাজের বিজ্ঞাপন স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় অগ্রাধিকার দেওয়া হোক।
সোশ্যাল মিডিয়াকে সঠিকভাবে অনুসন্ধান করে, তাদের প্রশিক্ষণ এবং সরকারি স্বীকৃতি প্রদান করা হোক।
কর্মরত সাংবাদিকদের নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দেওয়া হোক।
জেলার সাংবাদিকদের সরকারি আবাসন প্রকল্পে ঘর দেওয়া নিশ্চিত করার পাশাপাশি সাংবাদিক সংগঠনগুলিকে আবাসন প্রকল্পে জেলা সদরের সন্নিকটে কো-অপারেটিভ-এর মাধ্যমে জমি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
সংবাদ আদান-প্রদানের জন্য জেলার প্রতিটি মহকুমা ও পৌরসভা লাগোয়া একটি করে প্রেস কর্ণারের ব্যবস্থা করা হোক।
সরকারিভাবে জেলার সাংবাদিকদের নিয়মিত প্রশিক্ষনের ব্যাবস্থা করা হোক।
প্রবীণ সাংবাদিকদের মাসিক পেনসন বৃদ্ধি করা হোক। এই অনুষ্ঠানে সংগঠনের তরফে একটি সুবিনিয়র প্রকাশিত করা হয়। এদিন প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সংগঠনের বার্ষিক রাজ্য সম্মেলনে সংগঠনের সদস্যদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিল মাস কমিউনিকেশনের ছাত্র ছাত্রীরাও।