নিজস্ব প্রতিনিধি, কোলকাতা : মঙ্গলবার রাজ্যের হাই স্কুল এবং মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক সংগঠন অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিষ্ট্রেসেস (এ এস এফ এইচ এম) এর ডাকে “বিকাশ ভবন চলো” অভিযানে বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েকশ প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকা বেতন বঞ্চনার নিরসনসহ শিক্ষাগত এবং পেশাগত জ্বলন্ত সমস্যার সমাধান চেয়ে অংশ নেন।
গত ২রা মে ‘২২ থেকে প্রধান শিক্ষক- শিক্ষিকাগণ তাঁদের দীর্ঘ দিনের প্রাপ্য বেতনের সঙ্গে যুক্ত অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট রাজ্য সরকার কেটে নেওয়া নির্দেশ দেয়। বকেয়া মেটানোর কথা বলে বিভিন্ন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাগণকে চাপ দিতে থাকেন বলে অভিযোগ সংগঠনের পক্ষ থেকে।
তাদের দাবি, পাহাড় সমান কাজের চাপে রাত দিন শারীরিক ও মানসিকভাবে পিষ্ট হচ্ছেন তাঁরা। অথচ সহ শিক্ষক পদের সমান বেতন নিতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। প্রায় আঠারো রকমের শিক্ষা বহির্ভূত কাজের সঙ্গে তাঁদের যুক্ত করা হয়েছে। ছুটির দিন এমনকি গ্রীষ্ম অবকাশ কিংবা পুজো অবকাশ্ চলাকালীনও তাঁদের ছুটি মেলে না। স্কুল আওয়ারের বাইরেও রাত দিন কাজের সঙ্গে তাঁদের যুক্ত থাকতে হয় বলে দাবি।
এমতাবস্থায় এই বেতন বঞ্চনা তাঁরা মানতে রাজি নন। এদিন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বিকাশ ভবনে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দপ্তরে, শিক্ষার প্রধান সচিব এবং স্কুল শিক্ষা কমিশনার এর কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। শিক্ষার ঐ আধিকারিকগণ বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখবেন এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বলে জানিয়েছেন।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, যদি শিক্ষা দপ্তর তথা রাজ্য সরকার তাঁদের এই দাবিকে না মেনে নেয় তাহলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যেতে তাঁরা বাধ্য হবেন। প্রয়োজনে শিক্ষা বহির্ভূত সমস্ত কাজ থেকে অব্যাহতি চাইবেন এবং আদালতের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হবেন।
প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা গণের মূল দাবিগুলো আজকে যা পেশ করা হয়েছে, নজিরবিহীন বেতন বঞ্চনার নিরসন করা, সকল শিক্ষা বহির্ভূত কাজ থেকে রাজ্যের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা গণকে অব্যাহতি দেওয়া, স্বচ্ছতার সঙ্গে অতি দ্রুত শূন্যপদে শিক্ষক – শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করা, প্রশাসনিক বদলির নামে শাস্তি মূলক বদলি রদ করা, শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য বিদ্যালয়গুলোকে ব্যবহার করা। কয়েকশো প্রধান শিক্ষক আজকে করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ডের কাছে জড়ো হন এবং অবস্থান বিক্ষোভ দেখান। ওখান থেকে মিছিল করে বিকাশ ভবনের দিকে যেতে থাকেন এবং পুলিশ বাধা দিলে একটি প্রতিনিধি দল বিকাশ ভবনে গিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন।