সাকিফ হোসেন, ডায়মন্ড হারবার : বেতন বৃদ্ধি ও কারখানার ম্যানেজারের অপসারণের দাবিতে স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিকদের বিক্ষোভের জেরে গত দু’দিন ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে ডায়মন্ড হারবারের সরিষার একটি বেকারি। বুধবার সকালে বেতন বৃদ্ধি ও মাসে বেশী দিন কাজের দাবীতে শ্রমিকদের বড় অংশ ইস্টার্ন বেকারি প্রাইভেট লিমিটেড নামক কারখানার গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখালে বন্ধ হয়ে যায় কাজ। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের বৈঠক হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি।
এরমধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে শ্রমিকরা কারখানায় কাজে যোগ দিতে গিয়ে জানতে পারেন কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এরপরই এদিন সকাল থেকে শতাধিক শ্রমিক কারখানার গেটের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। দাবির স্বপক্ষে কারখানার দেওয়ালে সাঁটানো হয়েছে বিভিন্ন পোস্টারও। এই কারখানাতে স্থায়ী শ্রমিক প্রায় আড়াইশো জনের বেশী এবং অস্থায়ী শ্রমিক প্রায় চারশো জনের মতো।
বিক্ষোভকারী শ্রমিকদের বড় অংশ কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন কারখানার ম্যানেজার মিঠু দাসের বিরুদ্ধে। শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, ‘স্থায়ী শ্রমিকদের ২৬ দিনের কাজ দেওয়ার কথা থাকলেও দশ থেকে বারো দিন কাজ দেওয়া হয়। ফলে অর্ধেক বেতন কেটে নেওয়া হয়। অন্যদিকে অস্থায়ী কর্মীদের রোজ ভিত্তিক মাত্র ২৩০ টাকা করে দেওয়া হয়। বেতন বৃদ্ধির দাবি জানানো হলে শ্রমিকদের সঙ্গে কারখানার ম্যানেজার মিঠু দাস দুর্ব্যবহার করেন। সংগঠনের কর্মকর্তাদের জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে আমরা কারখানার ম্যানেজারের অপসারণের পাশাপাশি বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছি।
তবে কর্তৃপক্ষের থেকে কোন সদুত্তর না পাওয়া পর্যন্ত আমরা এই আন্দোলন জারি রাখবো।’ এই কারখানার একমাত্র রেজিস্ট্রার শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি পরিচালিত। সেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ডায়মন্ড হারবার ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল যুব সভাপতি মাহাবুবার রহমান গায়েন। তিনি জানিয়েছেন, ‘প্রতি দু’বছর অন্তর মজুরি বৃদ্ধি করা হয়। এবার মে মাস পড়ে গেলেও কোন মজুরি বৃদ্ধি হয়নি। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে কারখানা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিলাম। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’ তবে কারখানার ম্যানেজার মিঠু দাসের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার ব্যাপারে মুখ খুলতে রাজি হননি। তিনি জানান, যা বলার কারখানার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলবেন।