গঙ্গাগার মেলার যাবতীয় ব্যায় রাজ্য সরকারই বহন করে : মূখ্যমন্ত্রী
লতা পুরকাইত, গঙ্গাসাগর: সোমবার গঙ্গাসাগর মেলার (Gangasagar Mela 2024) চূড়ান্ত পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখতে সাগরদ্বীপ এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসন্ন গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি উদ্বোধন করলেন একগুচ্ছ প্রকল্পের। যার মধ্যে আছে সাগর ব্লকে ছয়টি পানীয় জল প্রকল্প। নামখানা ব্লকের সীমা বাধ ও সেতু নির্মাণ। পাথর প্রতিমা ব্লকে গঙ্গা সেতু।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী যান সাগরের ভারত সেবাশ্রম সংঘে। সেখানে তিনি গ্রামীন মহিলা স্বনির্ভর প্রকল্পের উদ্ভোধন করেন। তারপর মুখ্যমন্ত্রী কপিল মুনির মন্দির পরিদর্শন করেন। সেইসাথে মোহন্ত জ্ঞানদাস মহারাজের সঙ্গে দেখা করেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, মেলাকে সফল করে তোলার জন্য যা দরকার সরকার তার সব কিছুই ব্যবস্থা করেছে। আমরা চাই এই মেলাকে ইউনেস্কো আন্তর্জাতিক ঐতিজ্যের স্বীকৃতি দিক কেন্দ্র। মন্দির প্রাঙ্গণে দাড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী সাগর মেলায় কয়েক লক্ষ টাকা ব্যায়ের “আলোর বর্ণমালা” জ্বালিয়ে দেন রিমোটের মাধ্যমে।

এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সাগর মেলা পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন মুখ্য সচিব বি পি গোপালিকা, মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও হরিকৃষ্ণ দ্রিবেদী, জেলা শাসক সুমিত গুপ্তা, মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা, জেলা সভাধিপতি নীলিমা বিশাল মিস্ত্রি ও সহকারী সভাধিপতি শ্রীমন্ত মালি, ডিজি রাজীব কুমার, জ্ঞানবন্থ সিং, আকাশ মেঘড়িয়া সহ প্রশাসনের একাধিক আধিকারিক কর্তা ব্যাক্তিরা। প্রসঙ্গত এবারেও মুখ্যমন্ত্রী গঙ্গাসাগর মেলাকে(Gangasagar Mela) কেন্দ্রের কাছে জাতীয় মেলা ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কিছুতেই এই মেলাকে জাতীয় মেলার স্বীকৃতি দিচ্ছে না বলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা এই নিয়ে চিঠি দিয়ে চলেছি কেন্দ্রকে, যদিও রাজ্য সরকারই এই মেলার যাবতীয় ব্যায় বহন করে আসছে।
গঙ্গাসাগর মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা তীর্থযাত্রীদের সুবিধায় রাজ্য সরকার মুড়িগঙ্গা নদীর উপরে সেতু তৈরির জন্য উদ্যোগী হয়েছে।
এজন্য বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই রিপোর্ট হাতে আসার পরে খরচের পরিমাণ সহ অন্যান্য বিষয় খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই সেতু তৈরি এবং মেলাটিকে জাতীয় মেলা হিসাবে ঘোষণার জন্যে রাজ্যের তরফে কেন্দ্রীয় সরকারকে বারংবার চিঠি দেওয়া হলেও তার কোন উত্তর না মেলায় রাজ্য সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে। পৌষ সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপধ্যায় এদিন গঙ্গাসাগর মেলার সূচনা করে একথা বলেন।

মেলা চলাকালীন ৯ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত তীর্থযাত্রীদের উপর থেকে তীর্থ কর মকুবের পাশাপাশি এই মেলায় আসা প্রত্যেক যাত্রীর জন্যে পাঁচ লক্ষ টাকা করে বীমার কথা ঘোষণা করেন মূখ্যমন্ত্রী। মেলা কে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিভিন্ন দপ্তরের মন্ত্রীদের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তা সহ সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানান।
গতবার মেলায় প্রায় ৮০ লক্ষ পুণ্যার্থী এসেছিলেন উল্লেখ করে এই বছর কুম্ভ মেলা না থাকায় আরও বেশি পুণ্যার্থী আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।