বিশ্বজিৎ দে, ত্রিপুরা : ভোটের মুখে ভাগ বাটোয়ারার জের ধরে প্রকাশ্যে ঝলসে উঠলো আগ্নেয়াস্ত্র । এলোপাতারি গুলিতে আহত হয়েছেন দুই ঠিকেদার । ঘটনা এয়ারপোর্ট থানার অধীন ব্যস্ততম এলাকা হিসেবে চিহ্নিত নতুননগর এলাকায়। যদিও হামলাকারীদের এলোপাতারি গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন সঞ্জয় দাস এবং হরিপদ দাস নামে দুই ব্যক্তি । একজনের পায়ে অপর জনের কোমরে গুলি লেগেছে । তাদের বাড়ি ছিনাইহানি এলাকাতে।
প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে , ঠিকেদারি কাজের নিগোসিয়েশন নিয়েই নাকি নিগো বাহিনী এই হামলা চালায়। গত কিছুদিন যাবতই পূর্ত দপ্তরের ঠিকেদারি কাজ এবং সিপিডব্লিওডি’র ঠিকেদারি কাজ নিয়ে শাসক দলের অনুগত নিগো বাহিনীদের মধ্যে টকঝক চলছিল। প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে সিপিডব্লিওডি’র একটি বড় ধরনের কাজ নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে পুজোর আগে গোষ্ঠী অবশ্য নিজেদের শাসকদলের অনুগামী দাবি করে নিজেদের অনুগত ঠিকেদারদের কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য সরাসরি ময়দানে নেমে পড়ে। সেই লড়াইকে কেন্দ্র করেই এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে অনুমান। কিছুদিন আগে ছিনাইহানি এলাকার একটি হোটেলে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সমঝোতার বৈঠকও বসে। সেই বৈঠক ব্যর্থ হয়। এমনকি গুলিতে আহত হরিপদ দাসের বাহিনী ঊষাবাজার এলাকার একটি বড় ক্লাবের পুজোর চাঁদা দেওয়ায় বাধা দেওয়ার ক্ষেত্রে চেষ্টা করে । এই ক্লাবের বিশালাকার পুজো হয়, মুলত সিপিডব্লিওডি’র ঠিকেদারদের আর্থিক সহায়তায় । কয়েকজন ঠিকেদারকে হরিপদ দাসের বাহিনী হুমকি দেয় এই পুজোতে তারা যেন দাবি মতো টাকা না দেয় । ফলে গত কিছুদিন যাবতই ছিনাইহানি , নতুননগর এবং ঊষাবাজার সিপিডব্লিওডি’র দুই নিগোসিয়েশন বাহিনীর মধ্যে তীব্র উত্তেজনা চলছিল।
ধারণা করা হচ্ছে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটলো প্রকাশ্য গুলি চালানোর মধ্য দিয়ে । দুটি স্কোরপিও গাড়ি থেকে নেমেই সোনারবাংলা ধাবার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সঞ্জয় দাস এবং হরিপদ দাসকে লক্ষ্য করে তিন যুবক দশ রাউন্ড গুলি চালায় বলেও এলাকা সূত্রে জানা গেছে । যদিও এলাকাবাসী প্রতিরোধে এগিয়ে আসার আগেই এরা স্কোরপিও নিয়ে পালিয়ে যায় । পুরো এলাকা জুড়ে সড়কের পাশে সোনার বাংলা ধাবার সামনে দুটি স্কোরপিও গাড়ি নিয়ে এসে হামলাকারীরা ধাবার সামনেই দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন লোককে লক্ষ্য করে এলোপাথারি গুলি চালাতে থাকে ।
ব্যস্ততম নতুননগর এলাকায় এই ধরনের অস্ত্রের ঝলকানিতে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে জে জার মতো ছুটে পালাতে থাকে। খবর দেওয়া হয় থানায়। খবর পেয়েই এয়ারপার্ট থানার ওসি এবং এসডিপিও দশ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় । গুলিবিদ্ধ সঞ্জয় দাস এবং হরিপদ দাসকে চিকিৎসার জন্য আইএলএস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । পুলিশের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেওয়া না হলেও তবে স্বীকার করা হয়েছে দুই ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা । নির্বাচনের মুখে নিগো বাহিনীর এই ধরনের প্রকাশ্যে অস্ত্রের আস্ফালন প্রমাণ করে ভোটে বা ভোটের প্রাক্ মুহূর্তে রাজ্যে কি ধরনের অশান্তি ছড়াতে পারে ।