চিহ্নিত করে ২৫০ গাছকে পরিচয় পত্র।
বন্দনা ভট্টাচার্য্য, হুগলী: একটি গাছ একটি প্রাণ। আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর এই উক্তিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে গাছকে ধ্বংস করে তৈরী হচ্ছে বড় বড় ইমারত। কংক্রিটের দেওয়ালের নীচে চাপা পড়ে যাচ্ছে সবুজের চাপা কান্না। কিন্তু চন্দননগর পুরনিগম ধ্বংস না করে উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে এগিয়ে এলো আরও এক ধাপ। এতদিন ছিল মানুষের পরিচয় পত্র। এবার তৈরী হতে চলেছে গাছের পরিচয় পত্র। গাছের গাছের ক্ষতি না করে গাছের গায়ে লাগানো হচ্ছে কিউ আর কোড। গাছের পরিচয় পত্র তৈরীর কাজ ঐতিহাসিক চন্দননগরে শুরু হয়েছে। জেলার মধ্যে এই প্রথম এই কাজ শুরু হয়েছে।
এক সময় ফরাসিদের শহর ছিল হুগলীর এই চন্দননগর। কালের নিয়মে সেই শাসনকালের পরিসমাপ্তি ঘটে। দীর্ঘ সময়ে শহরের বিবর্তন ও ইতিহাসের সাক্ষী বহন করে শহরের বুকে এখনও দাঁড়িয়ে আছে বহু প্রাচীন গাছ। যাদের বেশীর ভাগই শতবর্ষ অতিক্রম করেছে। শতাব্দী প্রাচীন এই গাছগুলো পরিবেশের বন্ধু হলেও সাধারন মানুষ এদের সম্মন্ধে অবগত নয়। তাই সকলের অবগতির জন্য তৈরী হচ্ছে গাছগুলোর পরিচয় পত্র। অভিনব এই কাজ শুরু করেছে চন্দননগর পুর নিগমের জীব বৈচিত্র্য বিভাগ। এই পরিচয় পত্র তৈরির কাজ প্রায় শেষ হতে চলেছে। প্রত্যেকটি গাছের গায়ে জি আই তার দিয়ে পিবিসি বোর্ড ও নাম্বার লাগানো থাকবে। আগত নতুন বছর ২০২৫ এর প্রথম থেকেই কৌতুহলী মানুষ ফোনের মাধ্যমে স্ক্যান করলে জানতে পারবেন শতাব্দী প্রাচীন এই গাছগুলোর পরমায়ু, বয়স, কার্যকারিতা সম্বন্ধে। ইতিমধ্যেই গাছগুলোতে নাম্বার বসানো প্রায় শেষের পথে।
চন্দননগরের মহানাগরিক রাম চক্রবর্তী বলেন, গাছের পরিচয় পত্র নিয়ে দেশে বা রাজ্যে কোন কাজ হয়েছে কিনা জানা নেই। তবে জেলার মধ্যে চন্দননগরে গাছের পরিচয় নথিভুক্ত করণের কাজ প্রথম। আপাতত স্ট্যান্ড ঘাট, চার্চ রোড সহ অন্যান্য কয়েকটি এলাকায় প্রায় ২৫০ গাছকে চিহ্নিত করে পরিচয় পত্র নথিভুক্ত করণের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এবার কৌতূহলী মানুষরা ডিজিটাল মাধ্যমে গাছগুলো সম্পর্কে সব তথ্য সহজেই জানতে পারবেন বলেও জানিয়েছেন রাম চক্রবর্তী। ধ্বংস করে নয়, উন্নত প্রযুক্তিগত চিন্তা ভাবনার মধ্য দিয়েও পরিবেশকে উন্নত করা যায়, সেটাই প্রমাণ করে দেখালো চন্দননগর পৌরনিগম।