বন্দনা ভট্টাচার্য্য, হুগলী: “বিজেপির তিনটি দোকান – একটি দিলীপ ঘোষ, একটা শুভেন্দু অধিকারী আর একটা সুকান্ত মজুমদার। এদের মধ্যে যে যত বেশী তৃণমূলের বদনাম করবে তার দোকান তত ভালো চলবে” –
বিজেপির তিনটি দোকান : বেচারাম মান্না।
সিঙ্গুরে একটি প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখার সময় শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে এমনই মন্তব্য করলেন সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না। সোমবার হুগলীর সিঙ্গুরের রেল স্টেশন সংলগ্ন বুড়া শান্তি মাঠে ভারতীয় জনতা পার্টির ডাকে একটি সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সভায় প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সভায় শুভেন্দু তাঁর বক্তব্যে বলেন, সিঙ্গুর থেকে ন্যানো কারখানা তাড়িয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্যের উদারতার সুযোগ নিয়ে মমতা ন্যানো কারখানা হতে দেয়নি। আর এর ফলে সিঙ্গুর কার্যত শশ্মানে পরিনত হয়েছে। সেই সময় সিঙ্গুরে যে আন্দোলন হয়েছিল, তাতে সিঙ্গুরের মানুষের সমর্থন ছিলোনা। এছাড়াও তৃণমূলের দুর্নীতি প্রশঙ্গে তিনি বলেন, চাকরী, বালি, কয়লা, গরু, চোরেরা সবাই তৃণমূল দল করে। এদিন সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্নাকে আক্রমণ করেও কটুক্তি করেন তিনি।
এরই প্রতিবাদে মঙ্গলবার সিঙ্গুর ২ আঞ্চলিক তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ওই একই জায়গায় পাল্টা প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সভায় উপস্থিত ছিলেন, সিঙ্গুরের বিধায়ক বেচারাম মান্না, হরিপালের বিধায়িকা করবী মান্না, চাঁপদানীর বিধায়ক অরিন্দম গুইন প্রমুখ ব্যাক্তিরা। এই সভায় শুভেন্দু অধিকারীকে তীব্র আক্রমণ করে মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, শুভেন্দু অধিকারীকে মানুষ চিনেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য। এই জননেত্রী ওকে মাতৃসম স্নেহ করতেন। সেই মাতৃসম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে মিথ্যা কুৎসা করে বেড়ায় শুভেন্দু। ও নিজেই বিভিন্ন দুর্নীতির সাথে যুক্ত। আইনের হাত থেকে বাঁচার জন্য অমিত সাহর পা ধরেছে। বাংলার ইতিহাসের মিরজাফরের থেকেও বড় মিরজাফর যদি কেউ থাকে, সে হল শুভেন্দু। সারদা নারদা মামলার প্রধান আসামি ও নিজেই। আগামী নির্বাচনের পর বিজেপির কার্যালয়ে ওকে চা দেওয়ার কাজ করতে হবে। শুভেন্দু অধিকারী সিঙ্গুরে এসে মানুষের মধ্যে উস্কানী দিয়ে হিংসা ছড়াবার চেষ্টা করছে।
কিন্তু সিঙ্গুরের মানুষ শান্তিপ্রিয়। তারা সচ্ছতার সাথে রাজনীতি করে। তাছাড়া তারা এটাও জানে শুভেন্দুর মিথ্যাচারের জন্যই বাংলা বঞ্চিত। গরীব মানুষের আবাস যোজনার টাকা, একশ দিনের কাজের টাকা কেন্দ্র আটকে রেখেছে এর মূলেও শুভেন্দুর মিথ্যাচার। সিঙ্গুরের মানুষ লাথি মেরে সিঙ্গুর থেকে সিপিএম সরকারকে তাড়িয়েছিল। ঠিক সেই ভাবেই বিজেপিকেও তাড়াবে। শুধু সময়ের অপেক্ষা। সিঙ্গুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু যে সকল মিথ্যে কুৎসা করে গেছে যদি তার সঠিক প্রমাণ দিতে পারে তবেই ও শিশির অধিকারী ছেলে অন্যথায় ওর পিতৃপরিচয় নিয়ে সন্দেহ আছে। সিঙ্গুরে কোনো হিংসার রাজনীতি হয়না। তিনি কোনো হিংসার রাজনীতি করেন না বলেই এখনও সিঙ্গুরে বিজেপি সমর্থকরা নিশ্চিতে ঘুরে বেড়ায়, শুভেন্দুর মত গদ্দার সিঙ্গুরে প্রবেশ করতে পারে। যদি তিনি হিংসার রাজনীতি করতেন তাহলে সিঙ্গুর থেকে বিজেপি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত বলেও জানালেন বেচারাম মান্না।