বন্দনা ভট্টাচার্য্য, হুগলী : “আদানী আমবানীকা সাথ,আদানী আমবানীকা বিকাশ”, কোন্নগর ষ্টেশনে হকারদের সাথে সাক্ষাৎ করতে এসে কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করে এমনই মন্তব্য করলেন ভাঙ্গড়ের বিধায়ক তথা আই এস এফ এর চেয়ারম্যান পিরজাদা নওসাদ সিদ্দিকী।
কয়েকদিন পূর্বে হাওড়া স্টেশনে হকার এবং আর পি এফ এর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে। এই সংঘর্ষের কারণে হকারদের একাংশ রেল অবরোধ করে হুগলী স্টেশনে। আই আর সি টি সির সাথে যুক্ত না থাকলে হকাররা স্টেশনে বা ট্রেনে হকারি করতে পারবে না বলে রেলের তরফে জানা যায়। এই নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরেই আর পি এফ হকারদের কাজে বাধা সৃষ্টি করছিল। মুলত এই সমস্যার শুরু হয়েছিল হুগলীর কোন্নগর স্টেশন থেকে।

কোন্নগর স্টেশন থেকে হাওড়া স্টেশন পযর্ন্ত রেল স্টেশন এবং ট্রেনের হকারদের উচ্ছেদের প্রতিবাদে রেল হকারদের সাথে সাক্ষাৎ করলেন ভাঙ্গড়ের বিধায়ক পিরজাদা নওসাদ সিদ্দিকী। মঙ্গলবার সন্ধ্যে নাগাদ তিনি কোন্নগর স্টেশনে আসেন। এরপর প্লাটফর্ম পরিক্রমা করেন। কথা বলেন রেল হকারদের সাথে। শোনেন তাদের অসুবিধার কথা। এরপর তিনি এই বিষয় নিয়ে কোন্নগরের স্টেশন প্রবন্ধকের সাথে কথা বলতে যান। কিন্তু স্টেশন প্রবন্ধক তার সাথে দেখা না করেই বেরিয়ে যান। যদিও নওসাদ সিদ্দিকীর আসার কথা আগে থেকেই ষ্টেশন প্রবন্ধককে জানানো হয়েছিল বলে জানা গেছে। পরে অবশ্য সহকারী স্টেশন প্রবন্ধকের সাথে নওসাদ সিদ্দিকী হকারদের বিষয়ে আলোচনা করেন। আলোচনা শেষে বিধায়ক পিরজাদা নওসাদ সিদ্দিকী সংবাদ মাধ্যমকে জানান,
কেন্দ্রীয় সরকারের স্লোগান ছিল “সবকা সাথ সবকা বিকাশ”। তাই যদি হয় তাহলে হকারি যাদের একমাত্র কর্ম সংস্থান, সেই গরীব, খেটে খাওয়া মানুষগুলোর রোজগারে বাধা দেওয়া হচ্ছে কেন? যারা তিরিশ বছর, চল্লিশ বছর ধরে হকারি করছে, অর্থের বিনিময়ে যাত্রীদের পরিসেবা দিচ্ছে।
এমনকি কোন রেল যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে বা কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে আর পি এফ আসার আগে হকাররাই সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। সেই হকারদের রোজগার বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। ষাট থেকে সত্তোর হাজার হকার রয়েছে যারা এই রোজগার থেকেই পরিবারের অন্ন বস্ত্রের যোগান দেয়। সেই রোজগার বন্ধ হয়ে গেলে এদের পরিবার নিয়ে চলবে কি করে এটা কেন্দ্রীয় সরকার একবারও ভাবছে না। হকারদের রোজগার বন্ধ করে শিল্পপতিদের ব্যবসা করার সুযোগ করে দিতে চাইছে মোদী সরকার। এই নিয়ে রাজ্য সরকার মুখে কুলুপ এঁটেছেন। মমতা ব্যানার্জীর উচিত স্পেশাল বিধান সভা তৈরী করে হকারদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে দ্রুততার সাথে সমধান করা। তবে রেলের আধুনিকরণের নামে গরীব খেটে খাওয়া মানুষগুলোর উপর অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। সামনে বাঙ্গালীর সব থেকে বড় উৎসব শারোদৎসব।
এই সময়টা এদের হকারদের রোজগার বন্ধ হয়ে গেলে এরা কি করবে। কপোর্রেট দুনায়ার কথা না ভেবে মানবিকতার দিকটা বিচার করে গরীব মানুষগুলোর উপর থেকে দমন পিরণ নীতি বন্ধ করা হোক। এদের উপরে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে আর পি এফ এর এই অত্যাচার কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। গরীব মানুষদের জন্য তৈরী ইন্ডিয়ান স্যেকুলার ফ্রন্ট। সৎ ভাবে খেটে খাওয়া মানুষগুলোর পাশে তিনি সবসময় থাকবেন বলেও জানিয়েছেন আই এস এফ এর চেয়ারম্যান পিরজাদা নওসাদ সিদ্দিকী।