গঙ্গাসাগর মেলায় গ্রেপ্তার কয়েক’শ।
নিজস্ব প্রতিনিধি, সাগর: মঙ্গলবার মকর সংক্রান্তি। এই উপলক্ষে গঙ্গাসাগরে ভিন রাজ্য সহ দেশের বাইরে থেকেও পুণ্যার্থী উপস্থিত হয়েছেন সাগর তটে। প্রথমদিনেই সেই সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৮৫ লক্ষ। সাগরে স্নানের মাহেন্দ্রক্ষন এদিন সকাল ৬:৫৮ মিনিট থেকে শুরু হয়েছে। বুধবার সকাল ৬:৫৮ মিনিট পর্যন্ত চলবে। পুণ্য লাভের আশায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেও তীর্থযাত্রীরা ভিড় করেছেন সাগর সঙ্গমে। এসেছেন বিদেশি পর্যটকরাও। ফলে গঙ্গাসাগর মেলা জন সমুদ্রে পরিনত হয়েছে। প্রবল ঠান্ডাকে উপেক্ষা করেই পুণ্যার্থীরা ডুব দিয়েছেন সাগরে। গৃহী থেকে সাধু সন্যাসী সকলের একটাই উদ্যেশ্য, মাহেন্দ্রক্ষনে সাগরে স্নান করে মোক্ষ লাভ করবেন। স্নানের পর কপালমুনির আশ্রমে পূজো দিচ্ছেন পুণ্যার্থীরা।
রাজ্য ও প্রসাশনের তরফে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে মেলা প্রাঙ্গন ও তার আশপাশের এলাকা। তেরো হাজারেরও বেশি পুলিশ কর্মী, আড়াই হাজার সিভিল ডিফেন্স ভলেন্টিয়ার, কুইক রেসপন্স টিম, ডিপ ডাইভার, ন্যাভাল ডাইভার এন ডি আর এফ এবং কোষ্ট গার্ড দিবারাত্রী তীর্থযাত্রীদের সুরক্ষায় নজরদারী চালাচ্ছে। নজর রাখা হচ্ছে জলপথ ও আকাশপথেও। প্রসাশনের সাথে ১৪২ টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রায় দশ হাজার সদস্য তৎপরতার সাথে কাজ করছে। পুণ্যার্থীদের সুবিধার্থে পি এইচ ই, এবং পুলিশ প্রসাশনের পক্ষ থেকে বাহান্নটি সাহায্যকারী ডেস্কেরও ব্যবস্থা রয়েছে। তীর্থযাত্রীর সংখ্যা যত বৃদ্ধি পেয়েছে, তার সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে আবর্জনার পরিমানও। মেলা প্রাঙ্গন ও সমদ্রতটের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে তিন হাজার সৈকত প্রহরী নিযুক্ত করা হয়েছে। আবর্জনা সংগ্রহের জন্য পঁচাত্তোরটি ই কার্ট ও সাতটি কঠিন বর্জ্য নিষ্কাশন ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থায়ী ও অস্থায়ী বারো হাজার শৌচাগারেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশাসন, ই-পরিচয় ও স্বেচ্ছাসেবী সদস্যদের সাহায্যে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া ৪৬৮৩ জনের মধ্যে ৪৬৬০ জনকে পুনরায় তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। ২৭২ টি পকেটমারীর ঘটনায় ২৬০ টি ঘটনার জিনিস উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। মেলায় বিভিন্ন অপরাধমুলক কাজের সাথে যুক্ত ঘটনায় পুলিশ ৬৭২ জনকে গ্রেফতার করেছে।
আগত তীর্থযাত্রীদের মধ্যে সাত জনের অসুস্থতার খবর পাওয়া গেছে। যাদের এয়ার লিফ্টের মাধ্যমে কোলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। এরা হলেন- উত্তরপ্রদেশের ঠাকুর দাস, বয়স ৭০, পশ্চিমবঙ্গের মহারানি মন্ডল (৮৫), উত্তরপ্রদেশের রাজকুমার পান্ডে (২০), বিহারের দেবীলাল যাদব (৭৫), মধ্যপ্রদেশের সন্তোষ পান্ডে (৫০) ও লক্ষণ সিং (৭৫) এবং ঝাড়খন্ডের রামযশ দুবে (৭৬)। মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। উত্তরপ্রদেশের অবদেশ তিওয়ারী, হরিয়ানার নাম দেব, ছত্রিশগড়ের হেমবতি নিসাদ,উত্তরপ্রদেশের রাজেশ্বর ও রাম প্রসাদ নন্দ গিরি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেলা অফিসে সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানান, আজ বিকেল তিনটে পর্যন্ত প্রায় ৮৫ লক্ষ তীর্থযাত্রী গঙ্গাসাগরে এসেছেন।