Saturday, June 14, 2025
Ad

অবশেষে ফিরিয়ে আনা হল বাংলাদেশ আটকে থাকা মৎস্যজীবী ও ট্রলার।

Must read

বাংলাদেশে আটকে থাকা রাজ্যের মৎস্যজীবীদের আর্থিক সাহায্য মুখ্যমন্ত্রীর।

নিজস্ব সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ: অবশেষে রবিবার দুপুরে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক জল সীমানায় বঙ্গোপসাগরের মাঝে দুই দেশের মৎস্যজীবীদের আদান-প্রদান সম্পন্ন হল। বাংলাদেশ থেকে ভারতে ফিরেছেন ৯৫ জন মৎস্যজীবী। ফেরানো হয়েছে আটক ৪টি মৎস্যজীবী ট্রলার। মুক্ত মৎস্যজীবীরা সকলেই কাকদ্বীপ এবং নামখানা এলাকার বাসিন্দা। অন্যদিকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরলেন ৯০ জন মৎস্যজীবী। মৎস্যজীবীদের মুক্তির খবর আসতেই মৎস্যজীবীদের পরিবারে খুশির হাওয়া।
সোমবার গঙ্গাসাগরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তবেই বাড়িতে ফেরেন তারা। মুক্ত মৎস্যজীবীদের পরিবার জানান, এসব কিছু সম্ভব হয়েছে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য। তিনি উদ্যোগী হয়েছিলেন বলেই আজ কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে কথা বলে আমাদের ঘরের মানুষকে ঘরে ফিরিয়ে দিলেন। পেটের দায়ে আমাদের বাড়ির ছেলেরা নদী এবং সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। এত বড় বিপদ থেকে বেঁচে ফিরে আসার পরও ওদেরকে আবারও বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যেতে হবে। এটাই আমাদের কপালের লিখন। আমাদের পাশে যে সরকার রয়েছে এটুকু ভেবেই আমরা নিজেদের মনকে সান্তনা দিই। বাংলাদেশ থেকে রাজ্যের ৯৫ জন মৎস্যজীবীকে ফিরিয়ে এনে প্রত্যেকের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার গঙ্গাসাগরে প্রত্যেক মৎস্যজীবীর হাতে দশ হাজার টাকা এবং একজন মৃত মৎস্যজীবীর পরিবারের হাতে দুই লক্ষ টাকার আর্থিক সহায়তা তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বছর অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় বাংলাদেশের জলসীমানা অতিক্রম করার অভিযোগে বেশ কয়েক দফায় ৬টি ট্রলার ও ৯৫ জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে আটক করেছিল বাংলাদেশের উপকূল রক্ষী বাহিনী এবং নৌ বাহিনী। তারপর থেকে ভারতীয় মৎস্যজীবীরা বাংলাদেশের জেলে বন্দি ছিলেন। উল্টোদিকে গত সেপ্টেম্বর মাসে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে ট্রলার উল্টে গিয়ে সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে ভারতীয় জলসীমানার ভেতরে সুন্দরবনের জম্বুদ্বীপের কাছে চলে আসেন ১২ জন বাংলাদেশী মৎস্যজীবী। তাদেরকে ভারতীয় একটি ট্রলার উদ্ধার করে নিয়ে আসে পাথরপ্রতিমায়। তারপর থেকে ভারতে জেলবন্দী ছিলেন মৎস্যজীবীরা। অন্যদিকে গত ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় ভারতের জলসীমানায় ঢুকে পড়ায় দুটি ভেসেল সহ ৭৮ জন বাংলাদশী মৎস্যজীবীকে আটক করে ভারতীয় উপকূল রক্ষী বাহিনী। তাদেরকে আটক করে উড়িষ্যার পারাদ্বীপে রাখা হয়েছিল। এরইমধ্যে বাংলাদেশজুড়ে শুরু হয় হিংসা। বাংলাদেশের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে ওঠায় গত নভেম্বর মাস থেকে কাকদ্বীপের মৎস্যজীবী সংগঠনের কর্মকর্তারা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন, রাজ্য সরকারের দারস্থ হয়েছিলেন। বিষয়টি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের পক্ষ থেকে কেন্দ্র সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছিল। বাংলাদেশে আটক মৎস্যজীবীদের সকলকেই দ্রুত ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছিল নবান্ন। কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্রুত বাংলাদেশের জেলে বন্দী এ রাজ্যের মৎস্যজীবীদের ফেরানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। জেল বন্দি ভারতীয় মৎস্যজীবীদের পরিবার দুশ্চিন্তায় দিন কাটাতে থাকে। অবশেষে দুই দেশ মৎস্যজীবীদের ফিরিয়ে দিতে সম্মত হয়। মুক্ত ভারতীয় মৎস্যজীবীরা সাগরদ্বীপে পৌঁছন সোমবার ভোররাতে। সোমবার গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে মুক্ত ৯৫জন মৎস্যজীবী ও তাঁদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মৎস্যজীবীদের আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি, উপহার তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।

- Advertisement -

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

Latest article