Thursday, June 19, 2025
Ad

Baba Gorakhnath:গো-মাতার রক্ষায় ব্রতী ত্রিপুরার বাবা গোরক্ষনাথ।

Must read

গাড়ি সহ গবাদি পশু আটক বিএসএফের।

ছবি সংগ্রহ বিশ্বজিৎ দে, ত্রিপুরা

বিশ্বজিৎ দে, ত্রিপুরা ,দিগন্তবর্তা : সম্প্রতি ত্রিপুরা-মিজোরাম সীমান্তের কাছে শিবলং থেকে মিয়ানমারের বার্মিস গবাদি পশু পরিবহনের বিষয়ে একটি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিএসএফ ৮৬টি গবাদি পশু আটক করেছে। এবং ১৮টি গাড়ি সহ ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ত্রিপুরার ধলাই জেলার লংতোরাই ভ্যালির মনু থানার অন্তর্গত শিববাড়ি এলাকায়। আটক করা গবাদিপশুগুলিকে ধর্মনগরে বাবা গোরক্ষনাথ গোশালা ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত “বাবা গোরক্ষনাথ গোশালা”য় স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

বি.এস.এফ. সূত্রে জানাগেছে যে বি.এস.এফ. ত্রিপুরার ১০৫ ব্যাটালিয়নের একটি দল ত্রিপুরার ধলাই জেলার মাছলি বাজার, মনু থানার কাছে শিববাড়ির ত্রি-জংশন এলাকায় ফাঁদ পেতে বসেছিল, ঠিক ভোর ৪টার দিকে গবাদি পশুবাহী যানবাহনগুলো এই এলাকায় আসে। প্রথমে গবাদি পশু বহনকারী সন্দেহে ২০টি যানবাহনকে আটক করে। এই পাচারকারীর নেতৃত্বে দুটি মাহিন্দ্রা স্করপিও ছিল এবং গবাদি পশুর অবৈধ পরিবহনে জড়িত ১৮ জনকে আটক করে।
১৮টি গাড়িতে মোট ৮৬টি গবাদি পশু উদ্ধার করা হয়েছে। ৮৬টির মধ্যে ৩টি গরু ঘটনাস্থলেই মারা গেছে এবং তিনটি পড়ে গিয়ে মর্মান্তিক ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এসব গরুর আনুমানিক বাজার মূল্য নয় কোটি টাকার বেশি বলে জানা গেছে।

“বাবা গোরক্ষনাথ গোশালা”

রাজ্যে এই প্রথম একবারে এত বড় সংখ্যক পাচার হওয়া গরু উদ্ধার হল। তবে তিনটি গরুর মৃত্যুর কারণ গাড়িতে কম জায়গা থাকা ও তীব্র গতিতে গাড়ি চালানোর কারণ বলে ধারণা করা যাচ্ছে। আর তিনটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়েছে যা পরবর্তী সময়ে গোশালাতে পাঠানো হয়। খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন সংগঠনের অনেক পদাধিকারী গোশালা পরিদর্শন করেন, বিশেষত উত্তর জেলা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এর জেলা প্রতিনিধিগণ।

পাশাপাশি দামছড়া পুলিশ উত্তর ত্রিপুরা জেলার অধীনে চোরাচালানের সময় আরও ১২ টি গবাদি পশু জব্দ করে এবং সঠিকভাবে লালন-পালন ও পরিচর্যার জন্য আবার “বাবা গোরখনাথ গোশালায়” পাঠানো হয় বলে জানা যায়।গোশালা কৃতৃপক্ষের অনুরোধে ভেটেরিনারি চিকিৎসকরা গোশালা পরিদর্শন করেন এবং আহত গরুগুলোকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন। চিকিৎসকদের পরীক্ষা ও প্রাথমিক পরিচর্যার পর শনাক্ত করা হয় ৮৯টি গরুর জ্বর, ৪টি গরুর লেজ গুরুতর জখম, ১৮টি গরুর শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর জখম, ১৫টি শিং ও ক্ষত ক্ষতিগ্রস্ত এবং ১১টি গরুর মুখে শ্লেষ্মা রয়েছে। মিনি ট্রাকে খুব জরাজীর্ণ অবস্থায় গরু নিয়ে যাওয়ায় তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের বেশ কয়েকদিন ধরে ক্রমাগত পরিচর্যার প্রয়োজন রয়েছে।

ছবি সংগ্রহ বিশ্বজিৎ দে, ত্রিপুরা

ভেটেরিনারি ডাক্তারদের দ্বারা নির্ধারিত ওষুধগুলি সরকারিভাবে পাওয়া যাচ্ছে না জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালে এবং তাই স্থানীয় ভেটেরিনারি ফার্মেসি থেকে কিনতে হবে এবং এর জন্য অনেক খরচ হয়।
ওষুধ ও পশুখাদ্যসহ গরুর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দৈনিক গড়ে ২৩,০০০/- টাকার বেশি খরচ হয়। (ঔষধ: ১১,০০০ + পশুখাদ্য: ১২,০০০/-)।“বাবা গোরক্ষনাথ গোশালা”-র পরিচালক কান্তি গোপাল দেবনাথ গবাদি পশুর রক্ষা এবং মঙ্গলের জন্য সম্ভাব্য সর্বত্র ছুটছেন। বছরের পর বছর ধরে তার নিরন্তর প্রচেষ্টায় এ ধরনের জব্দ করা গবাদিপশুর অবস্থা এখন যথাযথ পরিচর্যার আওতায় রয়েছে।


গত বছর থেকে বার্মিজ গবাদি পশু পাচার বেড়েই চলেছে। প্রতিটি দিক থেকে বিপুল সংখ্যক বার্মিজ গবাদি পশু পুলিশ এবং বি.এস.এফ. যৌথভাবে আটক করে যেগুলিকে লালন-পালনের জন্য “বাবা গোরক্ষনাথ গোশালায়” পাঠানো হয়। গত ২ মাসে ভাংমুন পি এসে ৩৬টি বার্মিজ গবাদিপশু আটক, কুমারঘাট পি.এস. থেকে ১২টি বার্মিজ গবাদিপশু এবং কাঞ্চনপুর পি এস থেকে ২৪টি বার্মিজ গবাদিপশু।

বিশেষ উল্লেখ্য যে পূর্বে ভাংমুন, কুমারঘাট এবং কাঞ্চনপুর থেকে আটক করা বার্মিজ গবাদিপশুকে সাব ডিভিশনাল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ছেড়ে দিয়েছেন। এছাড়াও আদালত কর্তৃক মালিকের পরিচয় সন্তুষ্ট হলে মালিকদের কাছে গবাদি পশু ছেড়ে দেওয়ার হয়। পাচারকার্যে জড়িত ব্যক্তিদের কাছ থেকে ন্যূনতম ফি নেওয়া হয়। আদালত কখনো আটক করা গবাদি পশুর ফিটনেস সার্টিফিকেট ও চান না। রাজ্যে এই জাতীয় প্রাণীদের প্রতি নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে সাংবিধানিক বিধান ইবা কি রয়েছে ?

- Advertisement -

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

Latest article