পড়াশোনায় অদম্য জেদ-আর দুঃখজনক লড়াই ছাত্রীর।
নিজস্ব সংবাদদাতা, কুলপি: উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষার মধ্যে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটল কুলপি কালিকা বিদ্যাপীঠ উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে। বুধবার পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই এক ছাত্রী আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরীক্ষা চলাকালীন সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে, তাকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে কুলপি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। পরে জানা যায়, ক্যান্সার আক্রান্ত ঐ ছাত্রী। তাই শরীরে এমন সমস্যা দেখা দিয়েছিল।
পরিবার সূত্রে জানাযায়, অসুস্থতার কারণে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল ডায়মন্ড হারবার হাসপাতাল থেকে। ওই ছাত্রীর নাম ছায়রাবানু খাতুন (১৯)। সে মাদারপাড়া হাই মাদ্রাসার ছাত্রী। তার পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল কুলপি কালিকা বিদ্যাপীঠ। পরীক্ষা শুরুর মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে সে অসুস্থ বোধ করে, জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।কুলপি সার্কেলের এসআই দেবাশীষ গায়েন জানান, ছাত্রীর ওই অবস্থা দেখে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও ঝুঁকি না নিয়ে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ছাত্রীর বাড়ির লোকের কাছ থেকে জেনে প্রয়োজনীয় ইনজেকশন ও অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর নিরাপত্তার মধ্যে হাসপাতালের বিছানায় বসেই সে ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষা সম্পন্ন করে। পরবর্তীতে ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পড়াশুনায় অদম্য জেদ ছায়রাবানুর, তার শারীরিক পরিস্থিতিতে আগামী পরীক্ষা গুলো যেখানে সুবিধা সেখানেই ব্যবস্থা করে দেবো বলে জানান দেবাশীষ বাবু।

ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন কুলপি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহিল মারুফ ও শিক্ষা কর্মাধক্ষ্য সুপ্রিয় হালদার। তারা ওই ছাত্রীর পরিবারের সাথে কথা বলেন। সুপ্রিয় হালদার জানান, এদিন উচ্চ মাধ্যমিকের দ্বিতীয় পরীক্ষা চলছিল। আমরা বিভিন্ন সেন্টার পরিদর্শন করছিলাম, হঠাৎই খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছাই। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক লড়াই। একদিকে ওই ছাত্রীটির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক, অন্যদিকে পড়াশোনা করে সে কিছু করতে চায়। তাই সে এই কঠিন পরিস্থিতিতেও হাসপাতালের বিছানায় জীবনের দ্বিতীয় বড় পরীক্ষা দিচ্ছে। ওই ছাত্রীর দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা এবং তার ভবিষ্যতের জন্য কোন সহযোগিতা প্রয়োজন হলে আমরা পাশে থাকব বলেও জানান।