GBS একটি স্নায়ু রোগ।
বন্দনা ভট্টাচার্য্য, হুগলী: উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙ্গার তাবাবেরিয়া গ্রামের অরিত্রর পর এবার গুলেন বারি সিন্ড্রোম এর উপসর্গ নিয়ে হুগলীতে মৃত এক ব্যক্তি। চিকিৎসার জন্য কোলকাতার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। পরিবার সূত্রে জানা যায়, হুগলীর ধনিয়াখালি ব্লকের খাঁজুরদহ মিল্কি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা বছর ৪৮ এর সতীনাথ লোহার এক সপ্তাহ আগে ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হন। প্রাথমিক ভাবে নিজেই ওষুধ কিনে খান সতীনাথ। এরপর তিনি ঠিক হয়ে যান। এর একদিন পর থেকেই শ্বাস কষ্ট শুরু হয়। হাত পা অবশ হতে শুরু করে। পরদিন থেকে অসুস্থতা বাড়তে থাকায় স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। চিকিৎসক পরীক্ষা করে GBS এর উপসর্গ মনে করে চিকিৎসা শুরু করেন। কিন্তু সতীনাথের অসুস্থতা বাড়ায় বুধবার ধনিয়া খালি গ্রামীন হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থার অবনতি হলে কোলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কোলকাতা যাওয়ার পথে চিকিৎসক শুভ্র ভট্টাচার্য্যর কাছে নিয়ে যাওয়া হয় সতীনাথ লোহারকে। ডাক্তার শুভ্র ভট্টাচার্য্য সতীনাথকে দেখে এবং পরিবারের সাথে কথা বলে গুলেন বারি সিনড্রোম (GBS) সন্দেহ করেন। এরপরই পরিজনেরা কোলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন বৃহস্পতিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।এদিনই সন্ধ্যায় গ্রামে নিয়ে আসা হয় মৃত সতীনাথের দেহ। পরিবারের দাবি, তেমন কিছুই হয়নি। শ্বাস কষ্ট এবং দুর্বলতার কারণেই মৃত্যু হয়েছে সতীনাথের। বিশেষজ্ঞদের মতে গুলেন বারি সিন্ড্রোম একটি বিরল স্নায়ু রোগ। রোগ থেকে নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক করেছেন। যেমন বাইরের খাবার বর্জন করা, কাটা ফল না খাওয়া, যেখানে সেখানে জল পান না করা, ভাত বেশী না খাওয়া, প্যাকেটজাত মাছ, মাংস না খাওয়া, খাওয়ার সময় ভালো করে হাত ধুয়ে খাওয়া। যদিও GBS ছোঁয়াচে নয়, তবুও জনবহুল এলাকায় অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। আর কোনো ব্যক্তির সামান্য উপসর্গ দেখা দিলেও তড়িঘড়ি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অন্যথায় বিরল এই স্নায়ু রোগ প্রাণঘাতী রূপ নিতে পারে বলেও অভিমত বিশেষজ্ঞের।