Wednesday, June 18, 2025
Ad

মকর সংক্রান্তির পূণ্য স্নানে গঙ্গাসাগরে ভিড় দেশ-বিদেশের পূন্যার্থীর।

Must read

গঙ্গাসাগরের পুণ্য স্নানে রেকর্ড ভিড়।

নিজস্ব প্রতিনিধি, সাগর : গত সোমবার গঙ্গাসাগর মেলা ২০২৫ এর উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গঙ্গাসাগর মেলা উদ্বোধন হওয়ার পর থেকেই পূণ‍্যার্থী এবং দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে সাগরের বেলাভূমিতে। দক্ষিন ২৪ পরগনা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রী গঙ্গাসাগরে পুণ্য স্নান সেরে কপিলমুনি দর্শন করে ফিরছেন। পূণ‍্যার্থী ও তীর্থযাত্রীদের জন‍্য রাজ‍্য সরকার ও প্রশাসনের তরফে একাধিক সুরক্ষা ব‍্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরিবহনের ব‍্যবস্থার পাশাপাশি ই- পরিচয়, ই- অনুসন্ধানের ব‍্যবস্থা করা হয়েছে। বাস, লঞ্চ, ভেসেল ইত‍্যাদির সঠিক অবস্থান সম্পর্কে তীর্থযাত্রীদের কাছে নির্ভুল তথ‍্য জানানোর জন‍্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এন এ ভি আই সি (NavIC) নামক একটি বিশেষ প্রযুক্তির সাহায‍্য নেওয়া হয়েছে। এই প্রযুক্তির মাধ‍্যমে দিকভ্রান্ত যে কোনো যাত্রীবাহী জলযানকে মেগা কন্ট্রোল রুম থেকে জি পি এস (GPS) ট্র‍্যাকিংয়ের সাহায‍্যে নিয়ন্ত্রন করা হচ্ছে। এবং পিলগ্রিম ট্র‍্যান্সপোর্ট ম‍্যানেজমেন্ট সিস্টেম (PTMS) অর্থাৎ তীর্থযাত্রী পরিবহন পরিচালন ব‍্যবস্থার মাধ‍্যমে দিবারাত্রী পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে।তীর্থযাত্রীদের সুবিধার্থে প্রতিটি বাসে একজন করে সাগরবন্ধু আছেন। দুর্ঘটনা এড়াতে এবং যাত্রাপথ সুরক্ষিত করতে যানবাহনের গতিসীমা প্রতিঘন্টায় ৪০ কি.মি. করা হয়েছে। হাওড়া, শিয়ালদহ ও নামখানা অতিরিক্ত ট্রেনের ব‍্যবস্থা রয়েছে। প্রত‍্যেকটি বার্জ ও ভেসেলে ম‍্যানপ‍্যাক সহ সিভিল ডিফেন্স ও পুলিশ কর্মীরা প্রহরায় আছে। গুরুত্বপূর্ণ জায়গা গুলোতে ২৪ টি ড্রোন, ১১৫০ টি সিসি টিভি, ১০টি স‍্যাটেলাইট ফোন ও ১৫০টি ম‍্যানপ‍্যাকের সাহায‍্যে নজর রাখা হচ্ছে। কোলকাতার বাবুঘাট থেকে সাগরমেলা পযর্ন্ত ১৬ টি বাফার জোন করা হয়েছে। এই বাফার জোনগুলোতে রয়েছে শৌচাগার, পানীয়জলের পাউচ ও প্রাথমিক চিকিৎসা ও বিশ্রামের সুব‍্যবস্থা। রয়েছে ১৪ টি মোবাইল ট্রিটম‍েন্ট ইউনিটের ব‍্যবস্থা। ঘন কু়য়াশায় মুড়িগঙ্গা নদী নিরাপদে পারাপার করার জন‍্য রয়েছে নদীতে থাকা বৈদ‍্যুতিক টাওয়ার ও জেটিতে কুয়াশাভেদী শক্তিশালী আলোর বন্দ‍োবস্তো। সাগরমেলায় আগত পূন‍্যার্থী ও তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন‍্য নিখুঁত পরিসেবার সব রকম ব‍্যবস্থা করা হয়েছে বলে দাবি মেলা কর্তৃপক্ষের।রাজ‍্যের মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা বন্দ‍্যোপাধ‍্যায় ৯ থেকে ১৭ই জানুয়ারি পর্যন্ত সাগর সঙ্গমে আগত তীর্থযাত্রী, সরকারি কর্মী,স্বাস্থ‍্যকর্মী, পরিবহন কর্মী, পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ও সাংবাদিকদের জন‍্য মাথাপিছু ৫ লক্ষ টাকা জীবনবীমা ঘোষনা করেছেন।বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও প্রশাসনের দক্ষতায় মেলায় হারিয়ে যাওয়া ৮৫৩ জনের মধ‍্যে ৮০৩ জন তাদের পরিবারের কাছে ফিরেছে। ৫ জনের অসুস্থতা ও তিন তীর্থযাত্রীর মৃত‍্যুর খবর পাওয়া গেছে।সোমবার গঙ্গাসাগর মেলা অফিসে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস, জনস্বাস্থ কারিগরি দপ্তরের মন্ত্রী পুলক রায়, দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা, শেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া, খাদ্য মন্ত্রী রথীন ঘোষ, পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিষ চক্রবর্তী, গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শ্রীমন্ত মালি, মথুরাপুরের সাংসদ বাপি হালদার, দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলার সভাধিপতি নিলীমা মিস্ত্রী, প্রাক্তন রাজ‍্যসভার সদস‍্য শুভাশিষ চক্রবর্তী, জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা, সুন্দরবন পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও, বিধায়ক মদন মিত্র, যোগরঞ্জন হালদার ও জয়দেব হালদার সহ বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকগণ।পূণ‍্যার্থীদের সুবিধার্থে, ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে যে সকল ব‍্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে, এদিন সবিস্তারে সংবাদ মাধ‍্যমকে জানানো হয়।এছাড়াও প্রতি সন্ধ‍্যার মত দিনশেষে এদিন সন্ধ‍্যাতেও আনুষ্ঠানিক ভাবে গঙ্গারতি সম্পন্ন হয়েছে। সাংবাদিক বৈঠকে রেকর্ড ভিড়ের দাবি করা হয়েছে এবারের গঙ্গাসাগরে। পুণ্যার্থীর সংখ্যা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে অনুমান করাই যায় যে, রেকর্ড হবেই। এদিন সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী জানান, সোমবার বিকেল ৪টের মধ্যে ৫৫ লক্ষের বেশি পূণ্যার্থী গঙ্গাসাগরে এসে স্নান সেরে কপিলমুনি দর্শন করে চলে গেছেন। মঙ্গলবার, অর্থাৎ ১৪ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তি। পুণ্য স্নানের সময় সকাল ৬টা বেজে ৫৮ মিনিটে। এদিন রাতভর অপেক্ষায় ছিলেন নির্দিষ্ট সময়ে পুণ্য স্নানের আশায়। সকাল থেকে লক্ষ লক্ষ পূণ্যার্থী গঙ্গাসাগরে স্নান করে কপিলমুনি দর্শন করেন।

- Advertisement -

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

Latest article