বন্দনা ভট্টাচার্য্য, হুগলি: দাদু লিখেছিলেন মরুতীর্থ হিংলাজের মত কালজয়ী উপন্যাস।সেখানে হিংলাজ মন্দিরে যাত্রাপথ কত কঠিন ছিল তার বর্ননা করেছিলেন অবধূত তথা দুলাল চন্দ্র মুখোপাধ্যায়। তার পৌত্র তারাশঙ্কর মুখোপাধ্যায় এবার সেরকমই কঠিন যাত্রা পথের পথিক হতে চললেন। দাদুকে নিয়ে ” অচেনা অবধূত” নামে বই লিখেছেন। অবধূতের ৪৭ তম মৃত্যু বার্ষিকি ১৩ ই এপ্রিল সেই বই প্রকাশিত হবে। তার আগে চার হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করবেন তারাশঙ্করবাবু। যার নাম দিয়েছেন “শীত কালীন হিমালয় পথযাত্রা”। অবধূত হুগলি জেলার চুচুড়ার জোরাঘাটে থাকতেন। সেখান থেকেই লিখেছিলেন অনেক জনপ্রিয় লেখা।বর্তমান পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশের হিংলাজ মন্দিরে যাওয়া নিয়ে লেখা অবধূতের “মরুতীর্থ হিংলাজ” বিকাশ রায়ের প্রযোজনায় চলচিত্র তৈরী হয়েছিল। সেই চলচিত্রে অভিনয় করেন উত্তম কুমার, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়,অনিল চ্যাটার্জি,চন্দ্রাবতী দেবী, পাহাড়ি সান্যাল, বিকাশ রায় প্রমুখ।অবধূতের নাতি তারাশঙ্কর মুখার্জী হিমালয়ের বিভিন্ন অঞ্চলগুলিকে পরিবেশ দূষণ থেকে মুক্ত রাখা এবং বিরল পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে পর্যটকদের সামনে তুলে ধরা, যাতে পর্যটকরা সেই জায়গাতে বেড়াতে যান তার আবেদন নিয়ে শীতকালীন হিমালয় পথযাত্রা করতে চলেছেন। ২৮ শে ফেব্রুয়ারি চুঁচুড়া থেকে যাত্রা শুরু করবেন চার সদস্যের একটি দল। এবং ১৬ই মার্চ এই যাত্রা শেষ হবে জম্মু তাওয়াই শহরে। প্রায় চার হাজার কিলোমিটার যাত্রাপথ পাড়ি দেবেন তারাশঙ্কর মুখোপাধ্যায় তার তিন সঙ্গীকে নিয়ে। পশ্চিমবঙ্গের পানি টংকি থেকে হিমালয় যাত্রা শুরু করে নেপালের কাঁকড়াভিটা ভরতপুর লুঙ্গিণী কপিলাবস্তু এবং শিশু পানি হয়ে উত্তরাখণ্ডে টনক পুর চম্পা বট বোয়াল ধাম এবং উত্তর কাশি হয়ে হিমাচল প্রদেশে রোরু নারকান্ডা, রামপুর বুসার, রেকংপিও, নাকো, টাবো, কাজা লোসার, কোঞ্জুম পাস, ছত্রু, শিশু উদয়পুর, পাঙ্গি, এবং কিলার হয়ে জম্বু কাশ্মীরের কিস্তাওয়ার, অনন্ত নাগ হয়ে শেষ হবে জম্মু তাওয়াই।
বৃহস্পতিবার তারাশঙ্কর মুখোপাধ্যায় এক সাংবাদিক সম্মেলন করে সবিস্তারে জানালেন। এই হাজার কিলোমিটার যাত্রাপথ কিছুটা বিরল এবং ঝুঁকি পূর্ণ হলেও এই রাস্তাকে তারা বেছে নিয়েছেন। কারণ পর্যটকদের কাছে এই রাস্তাগুলো খুব বেশি পরিচিত নয় আর এই পথযাত্রার উদ্দেশ্যেই হলো হিমালয়ের অঞ্চলগুলিকে পরিবেশ দূষণ থেকে মুক্ত রাখার এবং বিরল পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে যাতে পর্যটকরা বেড়াতে যান সেই আবেদন করা। তারাশঙ্কর বাবু জানান, তার একটি কনসালটেন্সি সংস্থা আছে।সেখানে প্রায় চল্লিশ জনের কাজের ব্যবস্থা করেছেন।তিনি নিজে সার্ভেয়ার ছিলেন।তাই সেই সংস্থার তিনজন কর্মি, পার্থ মাইতি, সন্দীপ পাল, শুভজিৎ পালকে নিয়ে নিজের গাড়ি করে ১৭ দিনে এই যাত্রা সমাপ্ত করবেন।
থিওম্যাটের উদ্যোগ উইন্টার ট্রান্স হিমালয়ান রোড ট্রিপ।

- Advertisement -