খন্ডিত মহিলার দেহ গঙ্গায় ফেলার চেষ্টা।
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: পিসি শাশুড়ির মুন্ডহীন দেহ গঙ্গায় ভাষাতে গিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়লো দুই মহিলা। ঘটনাটি ঘটেছে কলকাতার কুমারটোলি গঙ্গার ঘাটে। মঙ্গলবার সকাল সাতটা নাগাদ দুই মহিলাকে একটি ভারী নীল ট্রলি ব্যাগ টেনে নিয়ে গঙ্গায় ফেলার চেষ্টা করতে দেখেন স্থানীয়রা। সন্দেহ হয় স্থানীয়়়দের, জিজ্ঞাসা করেন ট্রলি ব্যাগে কি আছে? তাতে মহিলারা উত্তর দেন পোষ্য কুকুরের দেহ। বিশ্বাস না হওয়ায় স্থানীয়রা নর্থ পোর্ট থানার পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে ট্রলি ব্যাগ খুলতেই বেরিয়ে পড়ে মুন্ডহীন মহিলার রক্তাক্ত খন্ডিত দেহ। এরপর পুলিশ দুই মহিলাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে ওই দুই মহিলার বাড়ি মধ্যমগ্রামে, সম্পর্কে এরা মা মেয়ে। মেয়ে ফাল্গুনী ঘোষ ও মা আরতি ঘোষ। মৃত মহিলার নাম সুমিতা ঘোষ। সুমিতা সম্পর্কে ফাল্গুনী ঘোষের পিসি শাশুড়ি।সুমিতা দেবীর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের নাদন ঘাটে। শিয়ালদহে বোনের বাড়িতে থাকতেন তিনি। নিজের কিছু গহনা সুমিতা দেবী ফাল্গুনী ঘোষের ব্যাংকের লকারে রেখেছিলেন। সম্প্রতি সেই গহনাগুলো ফেরৎ চান সুমিতা দেবী এবং তা নিয়েই গন্ডগোলের সূত্রপাত। ফাল্গুনী ঘোষের স্বামী কর্মসূত্রে থাকেন অসমে। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তিনি ডিভোর্স করে দিয়ে আড়াই বছর আগে চলে আসেন মধ্যমগ্রামে। মা আরতিকে নিয়ে বিরেশ পল্লীর একটি ভাড়া বাড়িতে এই আড়াই বছর ধরে ভাড়া ছিলেন। গত ১১ তারিখ পিসি শাশুড়ি সুমিতা ঘোষ গয়না ফেরৎ নেওয়ার জন্য মধ্যমগ্রামের ফাল্গুনী ঘোষের বাড়িতে আসে। এরপর থেকেই স্থানীয়রা প্রায়ই এই বাড়ি থেকে চিৎকার চেঁচামেচির আওয়াজ পেতেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সোমবার রাতে তাদের মধ্যে বচসা শুরু হলে, ইট দিয়ে মাথা থেতলে সুমিতা দেবীকে খুন করে মা ও মেয়ে। দেহ লোপাটের জন্য মাথা ও পা কেটে সুমিতা দেবীর বাকি দেহাংশ ট্রলিতে ভরে কলকাতায় চলে আসেন। কুমারটোলির ঘাটে দেহ ফেলতে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা হাতেনাতে ধরে ফেলেন মা ও মেয়েকে। ধৃতরা জানিয়েছে, প্রিন্সেসঘাট মধ্যমগ্রাম সহ তিন জায়গায় দেহ ফেলার চেষ্টা করেছিল। অপরদিকে মধ্যমগ্রামে যে এলাকায় মা ও মেয়ে ভাড়া থাকতো, সেই এলাকার মানুষ জানিয়েছে মা এবং মেয়ের স্বভাব ভালো ছিল না। সন্ধ্যে হলেই বাইরের ছেলেরা এসে বাড়িতে আসর জমাতো। প্রতিবেশীদের বাড়ি থেকে ছোটখাটো চুরির অভিযোগও রয়েছে মায়ের নামে। এসব নিয়ে স্থানীয়রা লিখিতভাবে একাধিকবার পৌরসভা এবং পুলিশকে জানিয়েছে। বাড়িওয়ালা কেও বলা হয়েছিল এদের ভাড়াবাড়ি থেকে তুলে দেওয়ার জন্য। পুলিশ সুমিতা দেবীর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্তের পরেই জানা যাবে তার মৃত্যু কবে এবং কিভাবে হয়েছে।