তরুনীর মৃত্যুর প্রতিবাদে রাস্তায় বিজেপি।
বন্দনা ভট্টাচার্য, হুগলি: ইভটিজাদের হাত থেকে বাঁচতে গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল হুগলির এক তরুণীর। এরই প্রতিবাদে সোমবার রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে দেখালেন ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য ও কর্মীবৃন্দ। হুগলির চন্দননগর বাগবাজার মোড়ে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বদের ডাকে দীর্ঘ সময় ধরে চলে অবস্থান-বিক্ষোভ। এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, জেলার বিজেপি সভাপতি তুষার মজুমদার, সম্পাদক সুরেশ সাউ, রাজ্য সম্পাদক দীপাঞ্জন গুহ সহ একাধিক নেতৃত্ব, উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কর্মী এবং সমর্থকরা। এরই সাথে শামিল হয়েছেন কিছু পথ চলতি সাধারণ মানুষও।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইভটিজারদের হাত থেকে বাঁচতে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় চন্দননগরের নারুয়া পাড়ার এক বাসিন্দা। সে পেশায় নৃত্যশিল্পী, ২৭ বছরের সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার গভীর রাতে চন্দননগর থেকে গয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন তরুণী সহ ৫ জন। একটি নৃত্যানুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে বুদবুদ থানা এলাকার একটি পেট্রোল পাম্পে গাড়িতে তেল নেওয়ার জন্য দাঁড়ায়। অভিযোগ, সেই সময় কয়েকজন যুবক একটি গাড়িতে চেপে এসে কটুক্তি করতে থাকে সুতন্দ্র কে। ভয়ে গাড়ির চালক দ্রুত গাড়ি নিয়ে এগোতে থাকেন, গাড়িও তাদের গাড়িটাকে ধাওয়া করে পানাগর বাজারের রাইস মিল রোডের মুখে মত্ত যুবকদের গাড়ি তরুণীর গাড়িটিকে আটকানোর চেষ্টা করে। এবং সেটিকে ধাক্কাও মারে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি প্রথমে রাস্তার ধারে একটি দোকানে ও পরে শৌচাগার এবং লোহার যন্ত্রাংশে সজরে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চন্দননগরের বাসিন্দা তরুণী ওই নৃত্য শিল্পীর।
পুলিশ অবশ্য ইভটিজিংয়ের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছে, দুটো গাড়ির রেষারেষির কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। সুতন্দ্রর মা অবশ্য মেয়ের মৃত্যুর জন্য ইফটিজারদেরই দায়ী করেছেন। তিনি জানিয়েছেন এর রূপশ্রী কন্যাশ্রী স্বাস্থ্যসাথী নয়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগে রাজ্যের মহিলাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করুক। অভয়ার পরে সুতন্দ্রার মৃত্যু। পশ্চিমবঙ্গের নারী সুরক্ষা কোথায়? জবাব দিতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। এই দাবি নিয়েই পথে নামে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। পথ অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে শুরু হয় বিক্ষোভ কর্মসূচি। দীর্ঘ সময় বিক্ষোভ চলার পর পুলিশের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে বিক্ষোভ তুলে নেয় বিক্ষোভকারীরা। এদিন দুপুরে মৃতসুতন্দ্রার শোকাহত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদিকা অগ্নিমিত্রা পাল। কথা বলেন তরুণীর মায়ের সাথে এবং পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। বেরিয়ে যাওয়ার সময় সংবাদ মাধ্যমকে অগ্নিমিত্রা পাল জানান, ইভটিজারদের হাত থেকে সুতনদার মৃত্যু। দুর্ঘটনায় হয়নি, তাকে মার্ডার করা হয়েছে। ২৭ বছরের তরুণীর অকাল মৃত্যুর দায় কার? কাঁকসা থানার পুলিশ জানিয়েছে সেই সময়ে পুলিশ পেট্রোলিং ছিল কিন্তু সেটা সর্বৈব মিথ্যা কথা । সেদিন কোন পুলিশ পেট্রোলিং ছিল না। পুলিশ যথাযথ তার ডিউটি পালন করলে সুতন্দ্রাকে এভাবে অকালে চলে যেতে হতো না। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই একজন মহিলা হয়েও রাজ্যের মহিলাদের কোন সুরক্ষারই ব্যবস্থা করতে পারেননি। তবে একের পর এক মহিলা নির্যাতন খুন ধর্ষণ এই পশ্চিমবঙ্গের বুকে ঘটে চলেছে।