Wednesday, June 18, 2025
Ad

“বাঙালি বাংলা গান শোনেনা” বড় আক্ষেপ ছিল শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ‍্যায়ের।

Must read

চির নিদ্রায় সঙ্গীত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা, কোলকাতা: দীর্ঘ রোগ ভোগের পর না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন বাংলা গানের গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ‍্যায়। মৃত‍্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। অস্ত্র প্রচারের পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন এই প্রবীন শিল্পী। তখন থেকেই তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। রেকটাম ক‍্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। সংক্রমন ছড়িয়ে পরেছিল ফুসফুস সহ শরীরের অন‍্যান‍্য অর্গানে। গত সোমবার শিল্পীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। অবশেষে শনিবার সকাল ১১. ৪০ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত‍্যাগ করেন। শিল্পীর প্রয়ানে শোকের ছায়া শিল্পী মহলে।অবিভক্ত বাংলার বরিশালে ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহন করেন প্রতুল মুখ‍োপাধ‍্যায়। দেশ ভাগের পর চলে আসেন এপার বাংলার চুঁচুড়ায়। শৈশব থেকেই গানের প্রতি আগ্রহ ছিল। মাত্র ১২ বছর বয়সে “আমি ধান কাটার গান গাই” দিয়ে পথ চলা শুরু। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি কোনোদিন সঙ্গীত শিক্ষা নেননি। প্রায় ২০০ টিরও বেশি গান রচনা করেছেন, সুর দিয়েছেন, গেয়েছেন। জীবনের প্রথম সমবেত অ‍্যালবাম ১৯৮৮ সালে “পাথরে পাথরে নাচে আগুন”। ১৯৯৪ সালে প্রথম একক অ‍্যালবাম “যেতে হবে”। ২০২২ সালে শেষ অ‍্যালবাম “ভোর”। শিল্পীর জনপ্রিয় গানগুলোর মধ‍্যে “আমি বাংলার গান গাই, আলু বেচো, চাঁদ, ছোকরা, সেই মেয়েটা, ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখ,” এর মত অসংখ্য গান শ্রোতার মন জয় করেছে। বাংলা ভাষা ছিল তাঁর স্বপ্ন দেখার ভাষা। সেই ভাষাতেই আজীবন খালি গলায় গান গেয়েছেন। সচরাচর বাদ‍্যযন্ত্র ব‍্যবহার করতেন না শিল্পী। বঙ্গবিভূষন, সঙ্গীত সম্মান, সঙ্গীত মহাসম্মান, নজরুল স্মৃতি পুরস্কার সবই তিনি পেয়েছেন।শিল্পীর প্রয়ানের খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে যান মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস, মন্ত্রী তথা সঙ্গীত শিল্পী ইন্দ্রনীল সেন। শিল্পীর মর দেহ হাসপাতাল থেকে রবীন্দ্র সদনে আনা হয়। শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সাধারণের জন‍্য দুপুর ২টো থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত সেখানেই শায়িত ছিল দেহ। বিকাল সোয়া চারটের সময় মুখ‍্যমন্ত্রী সেখানে পৌছে শিল্পীকে মাল‍্যদান করে সম্মান জানান। সমবেদনা জানান প্রয়াত শিল্পীর স্ত্রী সর্বানী মুখোপাধ‍্যায়,ও পরিজন সহ অসংখ‍্য গুণমুগ্ধদের। মুখ‍্যমন্ত্রী বলেন,প্রতুলদার মৃত‍্যুতে সঙ্গীত শিল্পী জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ‍্যায় দেহ এবং চক্ষু দানের অঙ্গীকার করে গিয়েছিলেন। গান স‍্যালুট দেওয়ার পর শিল্পীর দেহ ফিরিয়ে দেওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানেই সম্পন্ন হয় দেহ এবং চুক্ষু দান প্রক্রিয়া। শিল্পী চলে গেলেন চির নিদ্রায়, কিন্তু তার শ্রষ্ঠার সৃষ্টি ” আমি বাংলায় গান গাই ” থাকবে বাঙালির মনে প্রাণে।

- Advertisement -

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

Latest article