বন্দনা ভট্টাচার্য, হুগলি: প্রয়াত হলেন বেলুড় মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী স্মরনানন্দজী মহারাজ। প্রয়ানকালে তাঁর বয়ব হয়েছিল ৯৫ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বার্ধক্য জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। গত জানুয়ারিতে মাস থেকে ভর্তি ছিলেন রামকৃষ্ণ সেবাপ্রতিষ্ঠানে। গত তেইশ দিন তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার রাত্রী ৮ টি ১৫ মিনিট নাগাদ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। অসুস্থ হওয়ার পর প্রথমে মহারাজকে পিয়ারলেস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিছুটা সুস্থ হলে তাকে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আবারও অসুস্থতার কারণে পিয়ারলেসে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে নিয়ে আসা হয় রামকৃষ্ণ সেবা প্রতিষ্ঠানে। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি এখানেই ছিলেন। ২০১৭ সালে আঠেরোই জুন রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের তৎকালীন অধ্যক্ষ স্বামী আত্মাস্থানন্দ মহারাজ দেহ রাখার পর এই পদের দায়ীত্বভার গ্রহন করেন স্বামী স্মরনানন্দ মহারাজ।
১৯২৯ তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুর জেলার আন্দামি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তখন তাঁর নাম ছিল জয়রাম। ১৯৪৬ সালে নাসিক থেকে বাণিজ্য বিভাগে ডিপ্লোমা করেন। ১৯৫২ সালে দিক্ষিত হন শ্রীরামকৃষ্ণের আদর্শে। এরপর তিনি কোলকাতায় আসেন ১৯৫৮ সালে। ১৯৭৬ সালে সারদাপীঠের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালে বন্যা বিদ্ধস্ত এলাকা থেকে দুর্গতদের উদ্ধারে দায়ীত্ব গ্রহণ করেছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দের ” জীব জ্ঞানে শিব সেবা ” কথাটি প্রতিটি কাজের মাধ্যমে পালন করেছেন।
তিনি অসুস্থ থাকাকালীন চলতি মাসেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। দেখতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজের দেহ রাখার খবর জানার পর নরেন্দ্র মোদি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। শোকবর্তা জানিয়েছেন মমতা ব্যানার্জীও। গভীর শোকের ছায়া নেমেছে তাঁর অগণিত ভক্তদের মধ্যেও। মঙ্গলবার রাত বারোটার পর স্বামী স্মরণানন্দজীর মরদেহ বেলুড়মঠে নিয়ে আসা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সারাদিন ভক্তদের শেষ দর্শনের জন্য দেহ শায়িত থাকবে। এদিন সকাল থেকেই গুরুদেবকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দুরদুরান্ত থেকে বেলুড়মঠে ভক্তরা ভিড় করেছেন। বুধবার রাতে বেলুড়মঠে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজের।