শ্রীরামপুর থানার পুলিশের জালে পাঁচ এটিএম জালিয়াতি। (ATM Frauds)
বন্দনা ভট্টাচার্য, হুগলী: চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের শ্রীরামপুর থানার পুলিশের বিরাট সাফল্য। প্রায় দুশোটি এটিএম কার্ড সহ গ্রেফতার পাঁচ জালিয়াত। ধৃতদের থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একটি চারচাকা গাড়িও। প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়, মার্চের চার তারিখ মঞ্জু মন্ডল নামে এক বৃদ্ধা হুগলীর মাহেশ এলাকার একটি কিয়ক্স -এ গিয়েছিলেন টাকা তুলতে। সেই সময় এক যুবক নিজে থেকেই মঞ্জু মন্ডলকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে। সাহায্য করার অছিলায় এক সময় বৃদ্ধার এটিএম কার্ডটি বদল করে যুবক চম্পট দেয়। এর কয়েকদিন পর প্রতারিত বৃদ্ধা পাশ বই আপডেট করানোর পর দেখেন তার এ্যাকাউন্ট থেকে চল্লিশ হাজার টাকা গায়েব। এরপরই গোটা ঘটনা জানিয়ে শ্রীরামপুর থানায় অভিযোগ করেন তিনি। অভিযোগের ভিত্তিতে চন্দননগর পুলিশ ও শ্রীরামপুর থানার পুলিশ যৌথ ভাবে ঘটনার তদন্তে নামে। কিয়ক্স এর কাছাকাছি সিসি ক্যামেরাতে একটি গাড়ি চিহ্নিত করে পুলিশ টিম। গাড়িটির খোঁজ শুরু করে পুলিশ।
রবিবার শ্রীরামপুর নগার মোড়ে পুলিশের নাকা চেকিং করার সময় পুলিশের নজরে আসে সেই গাড়িটি। তৎক্ষনাৎ গাড়িটি আটক করে পুলিশ। তল্লাশি চালিয়ে গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বিভিন্ন ব্যাঙ্কের প্রায় দুশোটি এটিএম কার্ড। গ্রেফতার করা হয় পাঁচ জালিয়াতকে। এরা হল – ১) রাজু বর্মন বয়স – তেত্রিশ, ২) শুভম মাল বয়স – আঠাশ, ৩) সঞ্জীব মাইতি বয়স – পঞ্চাশ, ৪) সুবীর সেখ, বয়স – বিয়াল্লিশ, ও ৫) সনৎ নস্কর, বয়স তিরিশ। এদের মধ্যে রাজু, শুভম ও সঞ্জীবের বাড়ি দক্ষিন চব্বিশ পরগনার বারুইপুরে। সুবীরের বাড়ি দক্ষিন চব্বিশ পরগনার রায় দিঘীতে। সনতের বাড়ি দক্ষিন চব্বিশ পরগনার কশবা এলাকায়। জেরায় ধৃতরা জানিয়েছে, বৃদ্ধার এটিএম কার্ডটা দিয়ে হুগলীর কোন্নগরের একটি এটিএম থেকে চল্লিশ হাজার টাকা তুলেছে। ধৃতদের এদিন শ্রীরামপুর আদালতে পেশ করা হলে, আদালত অভিযুক্তদের দশ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে।
এই বিষয়ে ডিসিপি শ্রীরামপুর জানিয়েছেন, এই জালিয়াত দলটির পুরোনো অপরাধের রেকর্ড আছে। রায়দিঘী ও লালবাজার পুলিশের খাতায় নাম রয়েছে। মূলত এরা কিয়ক্সের কাছাকাছি থাকতো। বয়স্ক মানুষ দেখলে সাহায্যের নামে তাদের এটিএম কার্ড হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দিত। পরে সুযোগ বুঝে টাকা তুলে নিত তাদের এ্যাকাউন্ট থেকে। এই কাজ করার জন্য দুস্কৃতিরা চারচাকাটি ভাড়ায় নিয়েছিল বলেও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।