বন্দনা ভট্টাচার্য্য, হুগলী : একটা সময় ছিল যখন গঙ্গার প্রায় প্রত্যেকটা ঘাটের পাশেই শ্বশান ছিল। কাঠে দাহ করা হত মৃতদেহ।আর শ্বশানের পাশে ছিল কালী মন্দির। শ্বশান কালী। উন্নত প্রযুক্তিগত কারণে এসেছে ইলেকট্রিক চুল্লি। তাই কাঠে দাহ করা হয় কালে ভদ্রে। কিন্তু কালী মন্দির গুলো রয়েছে। সেখানে নিত্যদিন নিয়ম করে পূজোও হয়।
এমনই এক শ্বশান কালী হল হুগলীর কোন্নগরের পঞ্চুদত্ত ঘাটের মা কালী।

কোন্নগর জিটি রোডে ডিওয়ালডি স্টপেজের পাশে পঞ্চুদত্ত ঘাটের পাশেই এই মন্দির। পাশ দিয়ে কুল কুল করে বয়ে চলেছে গঙ্গা। মা এর এই মৃন্ময়ী মূর্তি পূজোর প্রচলন বহু দিন আগেই হয়েছে। এলাকার প্রবীন মানুষদের থেকে জানা যায়, মন্দিরটি প্রায় দুশ বছর আগেকার। প্রথমে মায়ের মূর্তিটি মাটির তৈরী ছিল। পরে মন্দিরের পরিচর্যার দায়ীত্ব স্বেচ্ছায় নিয়েছিলেন একজন সন্যাসী। যিনি সবার কাছে মানিক সাধু নামে পরিচিত। তাঁর উদ্যোগেই দশ – বারো বছর আগে মা কালীর মাটির মূর্তিটির পরিবর্তন করে পাথরের বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করা হয়। পাশেই রয়েছে ডিওআলডি কারখানা।
কারখানার মালিকের তত্বাবধানে মন্দিরের পারিপার্শিক উন্নতি হয়। এই এলাকার পৌর প্রতিনিধি সুভাশিষ চৌধুরী বলেন, নিত্য পূজোর পাশাপাশি বিশেষ দিনেও মা কালীর পূজো হয় মহা ধূমধাম সহকারে। দ্বীপান্বিতা কালি পূজো, তারা মায়ের আবির্ভাব, তিরোধান এই দিন গুলোতেও বিশেষ পূজো হয়। সব থেকে বড় উৎসব হয় অন্নকূট। প্রায় তিন থেকে সারে তিন হাজার ভক্ত এদিন প্রসাদ গ্রহণ করে। মায়ের মন্দিরের ঠিক বিপরীত দিকে শান বাঁধানো আর একটি মন্দির আছে। কথিত আছে ১৮৮২ সালের ৩ রা ডিসেম্বর রবিবার শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরম হংস দেব গঙ্গা পার হয়ে এই ঘাটে এসেছিলেন। এবং এখানে কিছু সময় অতিবাহিত করেছিলেন।