Wednesday, June 18, 2025
Ad

সুন্দরবনের দ্বীপ বাঁচাতে অভিনব পদ্ধতিতে ম্যানগ্রোভ তৈরি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার।

Must read

পলি জমিয়ে ম্যানগ্রোভ তৈরি সুন্দরবনে।

নিজস্ব প্রতিনিধি, পাথরপ্রতিমা : আমরা জানি যে ম্যানগ্রোভ বন উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা সামুদ্রিক ও স্থলজ সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি বাফার হিসাবে কাজ করে এবং ক্ষতিকারক বায়ু, তরঙ্গ এবং বন্যা থেকে উপকূলরেখা রক্ষা করে। ম্যানগ্রোভ বন ভূমি থেকে পলি সরিয়ে এবং উপকূলীয় ক্ষয় কমিয়ে জলের গুণমান উন্নত করে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা ব্লকের অচিন্ত্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষ্মীপুর এলাকায় নদী বাঁধ বরাবর একটি অভিনব পদ্ধতিতে বাঁশের গার্ড দেয়ালের ভিতরে পলি জমা করে ম্যানগ্রোভ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সুন্দরবন সোসাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সোমবার তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। উপস্থিত ছিলেন পাথর প্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনুশ্রী মন্ডল ও সহ সভাপতি রাজ বাহাদুর সিং, কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ রাধাশ্যাম পন্ডিত, অচিন্ত্য নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের এবং সুন্দরবন সোসাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের প্রতিনিধিরা।

সংস্থার তরফে জানানো হয়, এই পদ্ধতিতে ১৩ একর নদী বাঁধে ম্যানগ্রোভ তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রথম দফায় ৭একর কাজ শুরু হয়েছে এদিন। সুন্দরবন সোসাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (SSDC) পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন ব-দ্বীপ অঞ্চলে অবস্থিত একটি বেসরকারি সংস্থা। দীর্ঘদিন যাবত SSDC দুর্যোগপ্রবণ সুন্দরবন দ্বীপ অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের মঙ্গলের জন্য নিজেকে সম্পৃক্ত করে চলেছে, যেগুলি সাধারণত দুর্গম এবং দরিদ্র জীবনযাত্রার সমস্ত দৃশ্যে আর্থ-সামাজিকভাবে পশ্চাদপদ হিসাবে চিহ্নিত।

এখানকার বেশির ভাগ মানুষই দরিদ্র শ্রেণীর সবচেয়ে দরিদ্র। যার জন্য তারা এখনও আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের রশ্মির আড়ালে বসবাস করছে। এই সংস্থা শুরু থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মানুষের মঙ্গলের জন্য নিবেদিত এবং গত ৩৪ বছর ধরে কাজ করছে। বর্তমানে SSDC মা ও শিশু স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পুষ্টি, নারীর ক্ষমতায়ন, জীবিকা প্রভৃতি ক্ষেত্রে বেশ কিছু সম্প্রদায়ভিত্তিক উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জল, স্যানিটেশন, চক্ষু স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং পরিবেশ সুরক্ষা এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রম সহ প্রত্যন্ত সুন্দরবন দ্বীপ অঞ্চলে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে।

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘সুন্দরবন সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ এর সভাপতি গোপাল চন্দ্র প্রামানিক জানান, নদীর এক কুল ক্ষয় হচ্ছে কিন্তু অপরকূল গড়ছে না। কারণ, পর্যাপ্ত পলি জমছে না। এই খরস্রোত এলাকায় সাধারণভাবে বহু ম্যানগ্রোভ তৈরি করা হলেও পলির অভাবে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পলি হচ্ছে ম্যানগ্রোভের জীবন, তাই আমরা এই অভিনব পদ্ধতি গ্রহণ করেছি যাতে পলী জমে এবং ম্যানগ্রোভ বাঁচে। আর ম্যানগ্রোভ বাঁচলে রক্ষা পাবে দ্বীপ। এই দ্বীপের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা ম্যানগ্রোভ রোপনের কাজ করছে। এবং ওই মহিলারাই তা পরিচর্যা করবে।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এই অভিনব উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানা। পাশাপাশি পলি জমিয়ে ম্যানগ্রোভ তৈরির পরিকল্পনায় বেশ উৎসাহিত দ্বীপ বাসি।

- Advertisement -

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

Latest article