Wednesday, June 18, 2025
Ad

সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর চিত্র

Must read

বন্দনা ভট্টাচার্য্য, হুগলী : হুগলীর চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েক হাজার রোগী আসে চিকিৎসা করে সুস্থ হওয়ার আশায়। এটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। এই হাসপাতালের পরিবেশটাই অত‍্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। হাসপাতাল চত্বরেই যত্রতত্র আবর্জনার স্তুপ। ব‍্যবহার করা জলের বোতল, স‍্যালাইনের বোতল, ওষুধের স্টিপ,গজ, সিরিঞ্জ, গ্লাফস,নোংড়া কাপড়, চায়ের ভার, প্লাস্টিক, এই সব কিছুই স্তুপাকৃত ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।নিকাশি নালাগুলোর অবস্থাও একই।

এতো গেল সামনের দিক। পিছন দিকের অবস্থা আরও ভয়াবহ। হুগলীতে বহু ডেঙ্গু আক্রান্ত। সরকারি ভাবে প্রচার করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার জন‍্য। অথচ এই সরকারি হাসপাতালের পিছনে দেখা নিকাশি নালা গুলো একেবারে মশার আঁতুরঘর। নোংড়া জমা জল, তার উপরেই পরে আছে ফেলে দেওয়া ভাত, হাসপাতালের সমস্ত নোংড়া। আগাছায় ভরে রয়েছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে দীর্ঘদিন পরিস্কার করা হয়নি। খোলা অবস্থায় রয়েছে শৌচালয়। ওয়ার্ডের ভিতরেও অপরিচ্ছন্নতা বিদ‍্যমান। দুর্গন্ধে ভরে আছে।

এই বিষয়ে হাসপাতালের সুপারিন্টেডেন্ট অমিতাভ মন্ডল জানালেন, সাফাইকর্মীর অভাব। তবে প্রতিদিন ওয়ার্ড এবং হাসপাতাল চত্বর পরিস্কার করা হয়। নিকাশি নালাগুলোতে কোনোভাবেই জল যেন জমে না থাকে সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে,নিয়মিত পরিস্কার করা হয়। আগাচ্ছা পরিস্কারেরও ব‍্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যদিও নিকাশি নালা গুলো দেখে মনেই হচ্ছে দীর্ঘদিন পরিস্কার হয়নি।

হুগলী চুঁচুড়ার পৌরসভার পৌরপ্রধান অমিত রায় বলেন, যেহেতু পি ডবলিউ ডির অন্তর্গত এই হাসপাতাল, তাই হাসপাতালের সব রকম রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্ব তাদের। তবুও মানবিকতার জন‍্য পৌরসভা থেকেও পরিষ্কার করা হয়। প্রশ্ন হচ্ছে সবাই যদি নিয়মিত পরিস্কার করেন, তাহলে এত স্তুপাকৃত আবজর্না,আগাছা, অপরিচ্ছন্নতা কেন? এই প্রশঙ্গে সমাজকর্মী জগন্নাথ ঘোষ জানালেন, হাজি মহম্মদ মহসিনের দানে এই হাসপাতাল তৈরী হয়েছিল। তার স্বপ্ন ছিল রোগীরা এখান থেকে চিকিৎসা করে সুস্থ হবেন। কিন্তু হাসপাতালের চারপাশের চুরান্ত অব‍্যবস্থা, দালাল চক্র, আয়াদের দৌরাত্ম্য, এই সব কিছুই প্রমান করছে মহম্মদ মহসিনের স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল। রাজ‍্যের মূখ‍্যমন্ত্রী নিজেই স্বাস্থ‍্যমন্ত্রী। তিনি মুখেই স্বাস্থ‍্য ব‍্যবস্থার উন্নতির কথা বলেন। আদপে ইমামবাড়ার মত গোটা পশ্চিমবঙ্গের সরকারি হাসপাতালের একই চিত্র।

হুগলীর কংগ্রেস নেতা মইনুল হক জানান, দুরদুরান্ত থেকে চিকিৎসা করাতে এসে রোগীরা ডাক্তারদের থেকে সঠিক পরিসেবা পায়না। ডাক্তার, আয়া, নার্সদের ব‍্যবহার নিয়েও রোগীর পরিজনদের অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতালে উন্নতমানের আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকা সত্বেও টেকনিশিয়ানের অভাবে রোগ সংক্রান্ত পরীক্ষাগুলো বেসরকারী জায়গা থেকে করাতে হচ্ছে। এর ফলে রোগীর পরিজনেরা আর্থিক সমস‍্যার সম্মুখীন হচ্ছে। হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা যথেষ্ঠ ভয়াবহও উদ্বেগজনক বলেও তিনি জানান। এই বিষয় অবগত করার জন‍্য চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদারকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।

- Advertisement -

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -

Latest article