নিজস্ব প্রতিনিধি, কাকদ্বীপ : কথায় আছে “হাতে না পারলে ভাতে মারতে হবে”
এমনটাই এক ঘটনা ঘটেছে দক্ষিন ২৪ পরগনার গোপালপুর অঞ্চলের হরেন্দ্রনগর ঠাকুর চক গ্রামে। উক্ত অঞ্চলের বিজেপির সাধারণ সম্পাদক হরেন্দ্র নাথ কামিলা, পরিবার নিয়ে ওই গ্রামে বাস করেন। কামিলা পরিবারের অভিযোগ, রবিবার রাতে দুষ্কৃতিরা চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ বিঘা জমি চাষের জন্য তৈরী এক কুইন্টাল চল্লিশ কেজি বীজ ধানের তলা পুড়িয়ে দিয়েছে ঘাষ মারা ওষুধ দিয়ে।

সোমবার সকালে এই খবর পেয়ে কামিলা পরিবারের সদস্যরা মাঠে গিয়ে এই ঘটনা দেখে হতবাক হয়ে যায়। আতঙ্কিত হয়ে পড়ে তারা। এই বিষয়ে কামিলা পরিবারের সদস্য হরেন্দ্র নাথ কামিলা বলেন, এমন ঘটনায় মুখের ভাষা হারিয়ে গেছে। তিনি বিজেপি করার কারণে হয়ত এই ঘটনা হয়েছে। তবে যে কারণেই হোক সারাটা বছর পরিবার নিয়ে কি করে সংসার চলবে এটাই চিন্তার বিষয়।
চাষের ফলনের উপরে নির্ভর করে সারা বছর তাদের চলে। বছরে যে ফলন হয় তার উপরে নির্ভর করেই এই পরিবারের জীবিকা নির্বাহ হয়। এবছর বীজের অভাবে আর চাষ করা হবেনা। কে বা কারা করল এমন কাজ? আতঙ্কে কোন রাজনৈতিক দলের নাম নিতে চায়নি পরিবারের কেউ। দুষ্কৃতিরা তাদের চরম ক্ষতি করেছে। এই ঘটনার কারণে প্রতিদিনের সামান্য খাদ্যটুকুও জোগাড় করা দায় হয়ে যাবে তাদের।

ঘটনার আকস্মিকতায় কামিলা পরিবারের অপর সদস্য বাদল কামিলা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। বাদল সম্পর্কে হরেন্দ্র নাথের দাদা। তিনি জানান, খবর পেয়ে গিয়ে দেখেন এই অবস্থা। প্রশাসনিক স্তরে জানালেও কেউ একবারের জন্য আসেনি। কামিলা পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ঢোলাহাট থানায়। বিজেপি সমর্থক বলেই কি ভোট পরবর্তীতে হিংসার কোপে পড়েছে পরিবারটি?
এই প্রশঙ্গে কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি সত্যেশ্বর মাইতি বলেন, গোপালপুর অঞ্চলে ভোটের আগে বা পরে কোন সমস্যা ছিলনা। হতে পারে পরিবারটি যে রাজনৈতিক দলের কর্মী ও সমর্থক, সেই দলের উর্ধতন নেতার কথায় নিজেরাই এমন কাজ করেছে। তবে এই কাজ যেই করে থাক, তার শাস্তি পাওয়া উচিত বলেও তিনি জানান। এই চূড়ান্ত ক্ষতি পুরণ হওয়া এবছরে সম্ভব নয়। সারা বছরে খাদ্য জোগান কোথা থেকে হবে, এই কথা ভেবে অঝোরে কেঁদে চলেছেন ৯০ বছরের বৃদ্ধা দ্রৌপদি কামিলা।