সমাপ্তি গঙ্গাসাগর মেলা ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধি, গঙ্গাসাগর : ৫ই জানুয়ারি থেকে ১৫ ই জানুয়ারি অর্থাৎ মকর সংক্রান্তি পর্যন্ত ৫১ লক্ষেরও বেশি পুণ্যার্থী কপিলমনি মন্দিরে পুজো দিয়েছেন। রবিবার গঙ্গাসাগরে একটি সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন রাজ্যের ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
ইউ টিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও ট্যুইটারের মতন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বর্তমানে ভারতবর্ষ এবং পৃথিবীর নানান দেশের প্রায় এক কোটি ভক্ত এই সময় (ই-দর্শন) মেলা প্রত্যক্ষ করেছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ভক্তের কাছে (অনলাইল ও অফলাইনে) ই- স্নানের প্যাকেট পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। ৭,৭৮০ জন পুণ্যার্থী এই ই-স্নানের সুযোগ লাভ করেছেন। 
২১ টি জায়েন্ট এল ই ডি টিভির মাধ্যমে কপিলমুনি মন্দিরের পূজা সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছে (গঙ্গাসাগর থেকে আউটাম ঘাট পর্যন্ত গোটা রাস্তায়)। লাইভ (সরাসরি) দর্শন করার সুবিধা ছিল।হারিয়ে যাওয়া মানুষের সহজে খোঁজ পাওয়ার জন্য শিশু ও বয়স্ক তীর্থযাত্রীদের প্রায় ২.৩ লক্ষ কিউ আর কোড স্ট্রিপ বিতরণ করা হয়েছে। যার ফলে এখনো পর্যন্ত সব হারিয়ে যাওয়া তীর্থযাত্রীরা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় তাদের পরিজনদের খুঁজে পেতে সমর্থ হয়েছে। মোট ৬৮ জন হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে, যাদের প্রত্যেককে খুঁজে তাদের পরিজনেদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিনের এই সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস সহ উপস্থিত ছিলেন কৃষি এবং পরিষদীয় বিষয়ক মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরী মন্ত্রী পুলক রায়, পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী, সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম চন্দ্র হাজরা, অগ্নিনির্বাপণ ও জরুরী পরিষেবা বিষয়ক দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সুজিত বোস, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর এবং কারিগরী শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন দপ্তর রাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, জেলাশাসক শ্রী সুমিত গুপ্তা।
শনিবার রাত ১১ টা থেকে রবিবার সকাল ৯:৩০ মিনিট পর্যন্ত অত্যন্ত ঘন কুয়াশা থাকার কারণে কোনো লঞ্চ ও বার্জে তীর্থযাত্রী পারাপার করা যায় নি।
পবিত্র গঙ্গাসাগরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত তীর্থযাত্রীদের পুণ্যস্নানের সমাপ্তি হয় রবিবার সন্ধ্যে ৬:৫৩ মিনিটে। প্রায় ৫১ লক্ষ পুণ্যার্থী আজ পর্যন্ত গঙ্গাসাগরে এসেছেন এবং পুণ্যস্নান করেছেন বলে জানানো হয়।
এখনো পর্যন্ত প্রায় ১১ লক্ষ পুণ্যার্থী রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে (বন্ধন) নিজের ছবি সম্বলিত শংসাপত্র পেয়েছেন। এই শংসাপত্র তীর্থযাত্রীদের বিশেষ প্রশংসা পেয়েছে।
মেলায় ১২৫ জন তীর্থযাত্রী সাগরদ্বীপের বিভিন্ন হাসপাতালে অসুস্থতার কারণে ভর্তি হয়েছেন। ২৫ জন তীর্থযাত্রীকে উন্নততর পরিষেবার জন্য কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তারমধ্যে ৭ জন কে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে এবং ১৬ জনকে ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্সে জরুরী ভিত্তিতে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।
জরুরী ভিত্তিতে কলকাতার এম. আর. বাঙ্গুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
এই পর্যন্ত গঙ্গাসাগর মেলায় আগত তীর্থযাত্রীদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মেলা শেষে সোমবার সকালে সমুদ্র সৈকতে স্বচ্ছ গঙ্গাসাগর অভিযান হয়। উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়, বঙ্কিম হাজরা, সুজিত বোস, জেলাশাসক ও এডিএম।