ভালোবাসা দিবসে কালা দিবস পালন।
বন্দনা ভট্টাচার্য্য, হুগলী: শুক্রবার কালা দিবস মেনে পুলওয়ামা শহীদ স্মরণে মোমবাতি মিছিল করলেন হুগলীর বিজেপি কার্যকর্তা সহ কর্মী সমর্থকরা। এদিন হুগলী জেলা কার্যালয় থেকে বিকালে মোমবাতি হাতে মিছিল শুরু হয়। এই মিছিলে অনেক সাধারণ মানুষও যোগ দিয়েছেন শহীদ সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। হুগলীর পিপুলপাতি মোড়ে এসে মিছিল শেষ হয়। এবং এখানে শহীদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। ১৪ ই ফেব্রুয়ারি দিনটা ভালোবাসা দিবস হিসাবে দীর্ঘ দিন পালিত হয়ে আসছে। তাহলে দিনটিকে কালা দিবস কেন মানা হচ্ছে? কি হয়েছিল এই দিনে? আর পাঁচটা দিনের থেকে এই দিনটি একটু আলাদা। প্রেম দিবস বলে কথা। স্যোশাল মিডিয়ায় ভরে গেছে ভালোবাসার পোষ্টে। প্রায় সকলেই যখন প্রেম দিবস মানাতে ব্যস্ত, তখনই জঙ্গি হামলায় ভারতীয় সেনাদের রক্তে লাল হয়ে গিয়েছিল ভূস্বর্গের মাটি।হৃদয় বিদারক ভয়ঙ্কর ঘটনায় শিউরে উঠেছিল ভারত সহ গোটা বিশ্ব। দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। ২০১৯ সালের ১৪ ই ফেব্রুয়ারি বারবেলায় জম্মু থেকে শ্রীনগরে দিকে যাচ্ছিল ভারতীয় সি আর পি এফ জওয়ানের একটি কনভয়। আড়াই হাজারেরও বেশি জওয়ান ছিল এদিনের ৭৮ টি সেনা কনভয়ে। জম্মু থেকে শ্রীনগর যাওয়ার পথে ওঁত পেতে ছিল জঙ্গীরা। জাতীয় সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় কাকাপোড়া – লেলহর লিঙ্ক দিয়ে রাস্তায় চলে আসে একটি বিস্ফরক বোঝাই গাড়ি। সেনাবাহিনীর কনভয় জম্মু কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার অবন্তী পাড়ার কাছে লেথোপোড়া অতিক্রম করার সময় ৫৪ নং ব্যাটেলিয়নের জওয়ানদের গাড়িতে ধাক্কা মারে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়িটি। বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় ৪০ জন ভারতীয় জওয়ান। এর মধ্যে দুই জন বাঙ্গালীও ছিল। নিহত হয়েছিল হামলাকারী জঙ্গী ২২ বছরের আদিল আহমেদ। আত্মঘাতী জঙ্গী হামলায় স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল গোটা দেশের মানুষ। দেশ জুড়ে উঠেছিল কান্নার রোল। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে ভূস্বর্গে সব থেকে বড় জঙ্গী হামলায় শহীদ হয়েছিলেন ৪০ জন জওয়ান। সেই দিন থেকেই প্রেম দিবস কালা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
এদিনের মিছিলে অন্যান্যদের সাথে উপস্থিত ছিলেন হুগলী সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তুষার মজুমদার, সম্পাদক সুরেশ সাউ প্রমুখরা। এই প্রশঙ্গে তুষার মজুমদার বলেন, ভারত মায়ের বীর সন্তানরা মাতৃসম দেশকে রক্ষা করার জন্য এই দিনেই তাদের জীবন বলিদান দিয়েছিলেন। তাই এই দিনে মোমবাতি মিছিল করে বীর যোদ্ধা ভারত মায়ের সন্তানদের স্মরণ করা হল। যারা প্রেম দিবস পালন করছে তাদের উদ্দ্যেশ্য করে তুষারবাবু বলেন ভ্যালেনটাইনস ডে ভারতীয় সংস্কৃতি নয়। ওটা ইউরোপীয় কালচার। এই দিনে যারা দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন তাদের স্মরন করা এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন প্রত্যেক ভারতীয়র কর্তব্য।