বন্দনা ভট্টাচার্য্য, হুগলী: ঝাড়গ্রামে গর্ভবতী হাতি হত্যার কারণে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানালো “আশ্রয় হোম এন্ড হসপিটাল ফর এ্যানিমাল ওয়েল ফেয়ার এ্যাসোসিয়েশান ” নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। শনিবার হুগলীর চন্দননগর স্টেশনের এক নম্বর প্লাটফর্মের টিকিট কাউন্টারের সামনে এই প্রতিবাদ সম্পন্ন হয়। সংগঠনের সদস্য ও সদস্যাদের সাথে সাধারণ মানুষও এই প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন।
প্রশঙ্গত উল্লেখ্য, গত ১৫ অগাষ্ট ২০২৪ স্বাধীনতা দিবসের সকালে শাবক সহ পাঁচটি হাতির একটি দল দুবরাজপুর হয়ে ঝাড়গ্রামের বিদ্যাসাগর পল্লী সংলগ্ন এলাকায় লোকালয়ে ঢুকে পরে। হাতির দলকে তাড়াতে সেই সময় বনদপ্তরের নির্দেশে ও সহায়তায় হুলা পার্টি জ্বলন্ত বল্লম ছুড়তে থাকে। অনভিজ্ঞ হুলা পার্টির ছোড়া সেই জ্বলন্ত বল্লম একটি গর্ভবতী হাতির শরীরে ঢুকে যায়। এর ফলে সেই হাতিটির মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় হুলাপার্টির দুই সদস্যকে ঝাড়গ্রাম পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ১৯৭২ এর ৯ নম্বর ধারায় বন্যপ্রাণী হত্যা মামলা ঋজু হয়েছে। বারবার হাতির দলের লোকালয়ে প্রবেশের যথাযথ কারণ নির্ধারণ করে বনদপ্তরের তরফে আগাম পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারতো। কিন্তু সেটা করা হয়নি। সামগ্রিক ভাবে এই ঘটনায় হাতিটির মৃত্যু সামাজিক ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা বলেই মনে করা হচ্ছে।
মর্মান্তিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মৃত মা হাতিটির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ও সকল পশু পাখীর নিরাপদ জীবনযাপনের অধিকার রক্ষার দাবিতে এদিন আশ্রয় হোম এন্ড হসপিটাল ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশন মৌন প্রতিবাদ জানায়। এই প্রশঙ্গে সংগঠনের সভাপতি গৌতম সরকার বলেন, পৃথিবীতে সমস্ত প্রানীর সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। আগে হাতির দল লোকালয়ে এলে আবার ফিরে যেত। কিন্তু বর্তমানে তাদের বাসস্থান কিছু মানুষের জন্য নষ্ট হয়ে গেছে। অপরিকল্পিত পর্যটন, নির্মানকাজ, জঙ্গল ধ্বংস, মুলত এই সব কারনে তারা বাধ্য হয়ে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে চলে আসছে। এবং মানুষ ও হাতির দ্বন্ধে একদিকে যেমন হাতির মৃত্যু হচ্ছে, তেমনই মানুষেরও মৃত্যু হচ্ছে। পশুপাখিকে অনাহূত বিরক্ত করা,এবং পশু পাখির বাস যোগ্য অরণ্যকে পর্যটন কেন্দ্র করা বন্ধ করে ওদের স্বাভাবিক ভাবে বাঁচতে দেওয়া হোক। পশুপাখি না থাকলে এই পৃথিবী মানুষেরও বাসযোগ্য থাকবে না।